সিলেটে ৬০ ঘণ্টা পর স্থগিত হয়েছে ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট। শুক্রবার ভোর ৬ টা পর্যন্ত ধর্মঘট পালনের কথা ছিল। বড়দিন ও শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারতে আসা মানুষের কথা চিন্তা করে ১২ ঘন্টা আগেই তা স্থগিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক শাব্বির আহমদ ফয়েজ।
তিনি জানান, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বড়দিন ও মাজার জিয়ারতে আসা মানুষের কথা চিন্তা করে ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে।
সিলেটে সকল পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে মঙ্গলবার ভোর ৬ টা থেকে ৭২ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘট পালন শুরু করে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ। আদালতের নির্দেশে সরকার কোয়ারি বন্ধ করার পর এই ধর্মঘট আহবান করে তারা।
এই ধর্মঘটের ফলে তিনদিন ধরে চরম দুর্ভোগে পড়েন সিলেটবাসী। পরিবহন ধর্মঘটের ফলে সিলেটের সঙ্গে দুরপাল্লার বাস যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি বিআরটিসি বাস চলাচলেও বাধা দেয় ধর্মঘট আহ্বানকারীরা। ধর্মঘট স্থগিতের পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে বাস চলাচল শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বন্ধ থাকা পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে সিলেটে গত মঙ্গলবার সকাল থেকে তিনদিনের ধর্মঘট শুরু করে ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ, বাস মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও পাথর ব্যবসায়ী মালিক ঐক্য পরিষদ।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পরিবেশের বিপর্যয় ঠেকাতে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের জাফলং, ভোলাগঞ্জ, শাহ আরেফিন টিলা, বিছনাকান্দি ও লোভাছড়া—এই পাঁচ কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
এরআগে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের দায়ের করা একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোতে সব ধরনের যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন উচ্চ আদালত।
সরকারের নিষেধাজ্ঞার পর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে আন্দোলন করে আসছেন পাথর ব্যবসায়ীরা। পরে আন্দোলনে তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হন পরিবহণ ব্যবসায়ীরা। একাধিক বিক্ষোভ-সমাবেশ করার পর মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার টানা ৭২ ঘণ্টার পরিবহণ ধর্মঘট ডাকা হয়।