রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২০ ডিসেম্বর, ২০২০ ১১:৪৪ : অপরাহ্ণ
চীনের কোন শহরের লোকেরা সবচেয়ে আনন্দে ও হাসিখুশী থাকতে ভালোবাসে? ২০১৮ সালের সমীক্ষায় এই উত্তরে এক নম্বর হয়েছিল উহান।
করোনাভাইরাসের আঁতুরঘর টানা ৭৬ দিন লকডাউন থাকার পর আবারও চেনা ছন্দে ফিরেছে উহান।
শহর আবার নিজস্ব মেজাজে, নিজের ছন্দে। উহান প্রমাণ করেছে এভাবেও ফিরে আসা যায়। গত এক বছরের মর্মান্তিক স্মৃতিগুলো হাতড়ে যাচ্ছে উহানের বাসিন্দারা।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এক রিপোর্টে সম্প্রতি উল্লেখ করেছে উহানে রাস্তায় গাড়ি এবং লোক গিজগিজ করছে। দোকান, বাজার, শপিং মল, বার, পর্যটন কেন্দ্র সব খোলা। বহু পরিবার পিকনিকে ব্যস্ত সময় পার করছে।
সেখানকার মানুষদের করোনাকালীন অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেছে রয়টার্সের প্রতিবেদক।
উহানে লক ডাউনে ভলেন্টিয়ারের কাজ করে মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দিতেন অ্যান জুনমিং।
লকডাউনের দিনগুলো স্মরণ করে তিনি রয়টার্সকে বলেন, সত্যি বলতে এ বছর উহানের রাস্তায় প্রাণী ছাড়া কোন মানুষ ছিল না। লকডাউনে কাজের প্রচুর চাপ ছিল, মাত্র এক বেলা খাবার খেতাম। চোখের সামনে পরিচিত অপরিচিতদের মৃত্যু দেখেছি। করোনার সংকট কাটিয়ে বিশ্বাস করি উহান ২০২১ সালে সমৃদ্ধি অর্জন করবে।
উহানের ম্যাড র্যাট ব্যান্ডের রিড গিটারিস্ট ঝাং সিংঘাও জানান, লকডাউনের দিনগুলিতে তিনি খুব বিরক্তবোধ করেছেন। কিছু গান লেখার চেষ্টা করেছেন, কারণ গান তার মনে প্রশান্তি বয়ে আনে।
ঝাং বলেন, সেই সময়গুলোতে টিভিতে বিশ্বের করোনা পরিস্থিতির আপডেট নিতাম। আমাদের এখনো সতর্ক থাকতে হবে। ভাইরাসকে অবহেলা করার সুযোগ নেই।
উহানের ব্যবসায়ী ডুয়ান লিং-এর স্বামী ফ্যাং ইউসুন, চিকিৎসক হিসেবে সেবা দেবার সময় কোভিডে আক্রান্ত হন।
ডুয়ান জানান, ওই দিন আমার জন্মদিন ছিল, আমার স্বামী হাসপাতাল থেকে একটি ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে আমরা এখন আছি, আশা করছি নতুন বছরে আমাদের ফুটফুটে একটি সন্তান পৃথিবীতে আসবে।
উহানে জাপানি রেস্টুরেন্টের মালিক লাই উন বলেন, বর্তমানের সময়গুলো খুব দ্রুত যাচ্ছে। মনেই হচ্ছে না এতোবড় মহামারীর মধ্যে আমরা ছিলাম। বর্তমানে জমজমাট, সবকিছু খোলা, ব্যবসা বাণিজ্য ভালো চলছে।
তিনি জানান, করোনার কারণে আমাদের অ্যান্টি বডি সৃষ্টি হয়েছে যা কিনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
২০১৯ সালের শেষ দিকে অজানা এক মরণ ভাইরাস চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে ছড়িয়ে পড়ে। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর প্রদেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায় মরণ ব্যাধিটি কোভিড-১৯।
ভয় আর মৃত্যুপুরীতে পরিণত হওয়া উহানে র্যাপিড টেস্টের মাধ্যমে ১ কোটি ১০ লাখ জনগণের করোনা টেস্ট করানো হয়।
এখন পর্যন্ত উহানে ৫০ হাজার ৩৪০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন ৪৬ হাজার ৪৭১। মারা গেছেন ৩ হাজার ৮৬৯ জন।
এখনো উহানের হাসপাতালগুলোয় জরুরি সেবা দিয়ে চলেছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
সূত্র: চ্যানেল আই অনলাইন