পদ্মা সেতুর প্রশংসা করে এর নির্মাণ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। পদ্মা সেতুর সাথে ভারতের ভুপেন হাজারিকা সেতুর তুলনা করে তিনি প্রশ্ন রাখেন, ভারতের আসাম এবং অরুণাচল রাজ্যের মাঝামাঝি ৯ দশমিক ১৫ কিলোমিটার লম্বা ভুপেন হাজারিকা সেতু নির্মাণ করতে লেগেছে ১১২৮ কোটি টাকা। আর ৬ দশমিক ২৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতু এখনও শেষ হয়নি। এটার শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার কোটি টাকার মতো।
শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে সার্বভৌমত্ব রক্ষা পরিষদের প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর একটা প্রশংসা করি। এটা কোনো দালালি করছি না। সত্যি সত্যি আমি মনে করি, পদ্মা সেতু একটা ভালো কাজ হয়েছে। এটা একটা স্বপ্নের সেতু তো বটেই, অন্তত দক্ষিণাঞ্চলের জন্য। কিন্তু এই সেতুর নির্মাণ নিয়ে কথা আছে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু একটি স্বপ্নের সেতু বটেই কিন্তু এই সেতু নিয়ে কথা আছে। এখন পর্যন্ত ঠিক কত হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে একদম আপডেটেড হিসাব করা হয়নি। সর্বশেষ যেটা বলেছিল ৩০ হাজার কোটি টাকা, তার সাথে আরো ১০-২০ হাজার কোটি টাকা যুক্ত হয়েছে। কমপ্লিট করতে হয়তো ২০ হাজার কোটি টাকা লাগবে। তার মানে ৬০-৭০ হাজার কোটি টাকা লাগবে এই সোয়া ৬ কিলোমিটার লম্বা সেতু বানাবার জন্য। ভারতের সোয়া ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ভুপেন হাজারিকা সেতু যদি ১১২৮ কোটি টাকা দিয়ে নির্মাণ করতে পারে, পদ্মা সেতু করতে এতো টাকা লাগবে কেন?
মান্না বলেন, ‘আমরা কাউকে কেয়ার করি না, নিজেদের টাকায় করেছি। কেন আপনারা তো চীন থেকে লোন নিয়েছেন। ওই টাকার মধ্যে চীনা কোম্পানি নাই? তারা করেছে না? তারা সুদ নিচ্ছে না। সুদের হার কত? মিনিমাম ৪%। আর বিশ্ব ব্যাংক যে টাকা দিতো, সেই টাকার সুদের হার ছিল পয়েন্ট টু-ফাইভ পারসেন্ট থেকে পয়েন্ট ফাইভ জিরো। নেননি কেন সেই টাকা?’
অনুষ্ঠানে ডাকসুর সদ্য সাবেক ভিপি নূরুল হক নূর বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ চরম সংকটের সম্মুখীন। গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। বর্তমান সরকার ভারতের গোলামি করে ক্ষমতায় থাকছে— এটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র ফেরাতে রাজপথে আন্দোলনের বিকল্প নেই।’
সার্বভৌমত্ব রক্ষা পরিষদের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সুভাষ চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ইশরাক হোসেন প্রমুখ।