রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৮ ডিসেম্বর, ২০২০ ৪:২১ : অপরাহ্ণ
রাজনৈতিক, রাষ্ট্রদ্রোহ ও ব্যাংক ঋণ খেলাপির ৭৮টি মামলায় জামিন শেষে মুক্তির প্রহর গুনছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী। তার বিরুদ্ধে সর্বশেষ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আপিলকৃত দুটি মামলা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ জামিন বহালের আদেশ দিয়েছেন। আলোচিত-সমালোচিত প্রভাবশালী এই বিএনপি নেতা এখন কেরানিগঞ্জ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন। জামিন-সংক্রান্ত কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছলে তিনি ১৫ দিনের মধ্যে মুক্তি পেতে পারেন বলে আশা করছেন তার পরিবারের স্বজন ও বিএনপি নেতাকর্মীরা।
আসলাম চৌধুরীর হাইকোর্টের আইনজীবী তার পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে রাজনীতি সংবাদকে জানান, এ পর্যন্ত আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে মোট ৭৮ মামলা হয়েছে। ৭৬টি মামলায় তিনি পূর্ব থেকে জামিনে ছিলেন। গত ৫ অক্টোবর দুদকের আপিলকৃত দুটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তার জামিন বহালের আদেশ দেন। তার বিরুদ্ধে এখন আর কোনো মামলা নেই। মামলার জামিন-সংক্রান্ত কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছলে তিনি মুক্তি পাবেন।
ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ২০১৬ সালের ১৫ই মে ঢাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন আসলাম চৌধুরী। গত চার বছর ধরে তিনি কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
গত চার বছর ধরে তিনি চট্টগ্রাম কারাগারে বন্দি ছিলেন। ২০১৬ সালের ১৯ জুন আসলাম চৌধুরীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়। মাস খানেক আগে তাকে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে আবার কেরানিগঞ্জ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারাগার থেকে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির প্রার্থী হন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরী। নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিদারুল আলম দুই লাখ ৬৬ হাজার ১১৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। কারাগারে থেকেও আসলাম চৌধুরী ৩০ হাজার ১৪ ভোট পান।
২০১৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ধারাবাহিক সহিংসতার নেপথ্যে আসলাম চৌধুরী নেতৃত্ব দিয়েছিল বলে অভিযোগ আছে। এসব সহিংসতার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে নাশকতার ১৭ টি মামলা হয়।
উল্লেখ্য, আসলাম চৌধুরী ২০০২ সালে জিয়া পরিষদের মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। তিনি তখন জিয়া পরিষদ, চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে ২০০৭ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। জেলা বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতে না হতে দুই বছরের মাথায় জেলার সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন তিনি। পাশাপাশি জায়গা করে নেন কেন্দ্রেও, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে। পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল জেলা বিএনপির সভাপতির সিংহাসনে বসেন তিনি। চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি থেকে ২০১৬ সালে তিনি একলাফে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিবের পদে আসীন হন।
রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের আগে এ বিএনপি নেতা বিসিএস ক্যাডারের চাকরি ছেড়ে এফসিএ কোর্স করেন এবং একটি সিমেন্ট কোম্পানির পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন।