রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ৭:১৪ : অপরাহ্ণ
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে দুই মামলায় আজ (৭ ডিসেম্বর) সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে হাজির করা হয়। তার বিরুদ্ধে করা কর ফাঁকির মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ আর জাকাতের অর্থ আত্মসাতের মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়েছে।
পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে সাঈদীকে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হাজির করা হয়। এ সময় আদালতের প্রাঙ্গণ ঘিরে পুলিশের সতর্ক অবস্থান নেয়।
মামলা দুটির শুনানি শেষে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাকে আবার আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক সৈয়দা হোসনে আরার আদালতে অর্থ আত্মসাৎ এবং বিশেষ জজ আদালত-৩ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে কর ফাঁকির মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল।
রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌঁসুলি রফিক উদ্দিন জানান, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে কর ফাঁকির মামলায় সাক্ষী আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় আগামী ৬ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করেছেন আদালত।
কর ফাঁকির মামলায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী একমাত্র আসামি। তার বিরুদ্ধে ৫৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮১২ টাকা কর ফাঁকির অভিযোগ আনা হয়। মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী ২০১১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে কর ফাঁকির মামলায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই মামলায় কোনো সাক্ষী হাজির করতে পারেনি। কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট কর সার্কেল ৫১ কর অঞ্চলের তৎকালীন উপ–কর কমিশনার মাসুমা খাতুন বাদী হয়ে মামলা করেন।
জাকাতের অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাঈদীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ২৮ ডিসেম্বর ধার্য করেছেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বেঞ্চ সহকারী রবিউল ইসলাম জানান, আসামিপক্ষ থেকে এই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আদালতের কাছে সময় চেয়ে আবেদন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আসামিপক্ষের আবেদনের বিরোধিতা করে বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ঠিক করেন।
জাকাতের অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাঈদীসহ ৬ জন আসামি। অপর ৫ আসামি হলেন-ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফুল হক, মসজিদ কাউন্সিল ফর কমিউনিটি অ্যাডভান্সমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, বন্ধুজন পরিষদের প্রধান সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ ইউনুস, ইসলামী সমাজ কল্যাণ কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল হক।
আসামিদের মধ্যে সাঈদী কারাগারে আছেন। আবুল কালাম আজাদ এবং আবদুল হক পলাতক রয়েছেন। অপর তিন আসামি জামিনে রয়েছেন।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে ২০১০ সালের ২৯ জুন সাঈদী গ্রেফতার হন। পরে ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এ মামলায় ২০১৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেন আপিল বিভাগ।