রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ৮:১৫ : অপরাহ্ণ
কুষ্টিয়া শহরের জগতি পশ্চিমপাড়া এলাকার ইবনে মাসউদ (রা.) মাদ্রাসার দুই শিক্ষকের নির্দেশে দুই ছাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই মাদ্রাসার দুই ছাত্রসহ দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে।
আজ রোববার (৬ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান খুলনার রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মাদ মহিউদ্দিন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইবনে মাসউদ (রা.) মাদ্রাসার দুই ছাত্র আবু বকর মিঠুন (১৯) এবং সবুজ ইসলাম নাহিদ (২০) ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছে। তাদের নির্দেশ দিয়েছেন একই মাদ্রাসার দুই শিক্ষক মো. আল আমিন (২৭) ও মো. ইউসুফ আলী (২৬)।
ছাত্র মিঠুন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার শিংপুর গ্রামের সমসের মৃধার ছেলে। নাহিদ দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর (গোলাবাড়িয়া) এলাকার মো. সামছুল আলমের ছেলে।
শিক্ষক আল আমিনজেলার মিরপুর উপজেলার ধুবইল গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে আর ইউসুফ আলী পাবনার আমিনপুর থানার দিয়াড় বামুন্দি এলাকার আজিজুল মণ্ডলের ছেলে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার রাত ২টা ১৬ মিনিটের দিকে পাঞ্জাবি-পায়জামা পরিহিত মাদরাসার দুই ছাত্র আবু বকর মিঠুন ও সবুজ ইসলাম নাহিদ পায়ে হেঁটে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যস্থলে আসেন। কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ওই ভাস্কর্যের গা ঘেঁষে থাকা মই বেয়ে উপরে ওঠেন। পিঠে থাকা ব্যাগ থেকে হাতুড়ি বের করে প্রথমে বঙ্গবন্ধুর হাতের উঁচু তর্জনীতে আঘাত করে। হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে প্রথমে হাত ও পরে মুখের অংশে ভাঙচুর করে। প্রায় নয় মিনিট পর একই মই দিয়ে নেমে পায়ে হেঁটে চলে যান তারা।
খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার মুহিদ উদ্দীন সাংবাদিকদের জানান, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে প্রথমে ইবনে মাসুদ মাদ্রাসার দুই ছাত্র আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে ভারত সীমান্তের দৌলতপুরের ফিলিপনগর গোলাবাড়ি গ্রাম থেকে সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ ও মিরপুর উপজেলার শিংপুর থেকে মিঠুনকে (১৯) গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাদরাসার দুই ছাত্র আবু বকর মিঠুন ও সবুজ ইসলাম নাহিদ সরাসরি ভাঙার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ডিআইজি খন্দকার মুহিদ উদ্দীন সাংবাদিকদের জানান, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের বয়ানে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওই দুই মাদ্রাসাছাত্র বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছেন।
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় শনিবার রাতে কুষ্টিয়া পৌরসভার সচিব কামাল উদ্দীন বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেছেন। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় আটক চার জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এই ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন।