রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৪ ডিসেম্বর, ২০২০ ১২:১০ : অপরাহ্ণ
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্প থেকে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে যেতে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরেরর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে জাহাজে করে সাগর পাড়ি দিয়ে ভাসানচরের উদ্দেশে রওয়ানা দেয়। দলটিতে নারী-পুরুষ-শিশু মিলিয়ে মোট ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা রয়েছেন।
এর আগে ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য রোহিঙ্গাদের বুধবার রাতেই উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প সংলগ্ন ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উখিয়া কলেজ মাঠের অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে ‘চল চল ভাসানচর চল’ লেখা ব্যানার লাগিয়ে সাড়ে ৩ হাজার রোহিঙ্গা ২৫টি বাসে করে চট্টগ্রামের পতেঙ্গার দিকে যাত্রা করেন। পতেঙ্গা থেকে আজ সকালে জাহাজে করে ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা হন রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটি। আজ দুপুরের দিকে তাদের ভাসানচরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
১ সপ্তাহের মধ্যে এ স্থানান্তর কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে।
নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমকেজেড শামীম জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের বোট ক্লাব, আরআরবি ও কোস্টগার্ডের জেটি থেকে জাহাজগুলো ছেড়ে যায়। রোহিঙ্গাদের বহনকারী জাহাজের ছয়টি নৌবাহিনীর, একটি সেনাবাহিনীর। সেনাবাহিনীর জাহাজটির নাম ‘শক্তি সঞ্চার’। আরও ১৯টি জাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে স্কট জাহাজও রয়েছে। এর আগে ভাসনচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের মালপত্রও জাহাজে তুলে দেওয়া হয়।
রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেয়ার কাজ করছে সরকার এবং ২২টি উন্নয়ন সংস্থা।
সমাজ কল্যাণ উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারপারসন জেসমিন প্রেমা জানান, এক লাখ রোহিঙ্গাকে সাময়িকভাবে বসবাসের জন্য নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে তৈরি করা হয়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশে দৃষ্টিনন্দন আবাসন ব্যবস্থা। শহরের অধিকাংশ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সেখানে নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি জানান, ভাসানচরে আধুনিক বাসস্থান ছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও খেলার মাঠ গড়ে তোলা হয়েছে। আর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য সেখানে মহিষ, ভেড়া, হাঁস, কবুতর পালন করা হচ্ছে। আবাদ করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি। পরীক্ষামূলকভাবে ধান চাষও করা হচ্ছে।
জেসমিন প্রেমা জানান, প্রকল্পটিতে যেন ১ লাখ ১ হাজার ৩৬০ শরণার্থী বসবাস করতে পারেন সে লক্ষ্যে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হয়েছে। ১২০টি গুচ্ছগ্রামে ঘরের সংখ্যা ১ হাজার ৪৪০টি।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট পরবর্তী মিয়ানমারে নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয় ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে।