চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া বৌ বাজার এলাকায় একটি অনুষ্ঠানে নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের সাথে তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়েছে স্থানীয় থানার ওসি নেজাম উদ্দিনের। নগর বিএনপির করোনা সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে মাইক ব্যবহার করা নিয়ে ওসি নেজাম বাধা দিতে গেলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে ডা. শাহাদাত ক্ষুব্ধ হয়ে ওসি নেজামকে শাসান।
শনিবার (২৮ নভেম্বর) ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নবাব খান। এতে স্থানীয় বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। বিকেল ৩টায় এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। ডা. শাহাদাতের বক্তব্যরে শেষ দিকে বাকলিয়া থানা পুলিশ এসে বাধা দিলে অনুষ্ঠানটি পণ্ড হয়ে যায়।
ঘটনার পর ডা. শাহাদাত ও ওসি নেজামের বাকবিতণ্ডার একটি ভিডি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, ঘটনার সময় ডা. শাহাদাত উত্তেজিত হয়ে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় ওসি নেজামকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘এমপি ইলেকশনের সময় এত্যে তোঁয়ারা ডাহাতি গইজ্জ্যো। এই বারো গ্যরিবেন। তই আঁরা ইলেকশনত কিল্লাই যাইয়্যুম ? তোঁয়ারা ভোট ডাহাতি গইল্যে আঁরা ইলেকশনত কিল্লাই যাইয়্যুম ? আঁরা ইলেকশনত যাইতম ন। একমাত্র এই হারণে ইলেকশনত যাইতম ন। (এমপি ইলেকশনের সময় তখন আপনারা ডাকাতি করেছেন। এবারো করবেন। তাহলে আমরা ইলেকশনে কেন যাবো? আপনারা ভোপ ডাকাতি করলে আমরা ইলেকশনে কেন যাবো? আমরা ইলেকশনে যাবো না। একমাত্র এ কারণে ইলেকশনে যাবো না।) ’
ওসি নেজামকে একথা বলার পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন ফোন করে একজনকে বলেন, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ইলেকশনে যাবো না। ইলেকশন করতে আমি আগ্রহী না।
ফোনে কথা বলা শেষে ডা. শাহাদাত ওসিকে উদ্দেশ করে আবার বলেন, কেন আমার মিটিং ভাঙবেন ?
তখন ওসি নেজাম বলে উঠেন-মাইক ব্যবহারের পারমিশন নাই।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. শাহাদাত হোসেন রাজনীতি সংবাদকে বলেন, একই অনুষ্ঠান আমি শুক্রবার পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডেও করেছি। এরআগে নগরীর ২৯টি ওয়ার্ডে আমি এ অনুষ্ঠান করে এসেছি। সেসব এলাকার থানা-পুলিশ তো আমার কর্মসূচিতে বাধা দেয়নি। এই ওয়ার্ডে পুলিশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাধা দিয়েছে। এরআগেও এই ওয়ার্ডে পুলিশ বিএনপির কর্মসূচিতে অহেতুক বাধা দিয়েছে।
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিএমপি থেকে মৌখিকভাবে আমাকে কর্মসূচির অনুমতি দিয়েছে। অনুমতি না থাকলে এর আগে ৩০টি ওয়ার্ডে কীভাবে অনুষ্ঠান করলাম ?
ডা. শাহাদাত প্রশ্ন রাখেন, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী যদি প্রোগ্রাম করতে পারে আমি কেন পারবো না ?
বাকলিয়া থানার ওসি নেজাম উদ্দিন রাজনীতি সংবাদকে বলেন, বিএনপির মিটিংয়ে মাইক ব্যবহারের কারণে বৌ বাজার এলাকার কয়েকজন অসুস্থ রোগী শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ হয়ে থানায় অভিযোগ করেন। এরপর আমি সিএমপি থেকে খবর নিয়ে জানতে পারি, বিএনপির এই অনুষ্ঠানের অনুমতি নেই। এরপর আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিই।
ডা. শাহাদাতের সাথে বাকবিতণ্ডার বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি অহেতুক আমার সাথে উত্তেজিত হয়ে গেছেন। আমি তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করি।