রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৮ নভেম্বর, ২০২০ ১১:৫৬ : পূর্বাহ্ণ
ইরানের স্বনামধন্য পরমাণুবিজ্ঞানী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গবেষণা ও উদ্ভাবন বিষয়ক সংস্থার চেয়ারম্যান মোহসেন ফাখরিজাদে হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনীর সামরিক উপদেষ্টা হোসেইন দেহাগান এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বজ্রপাতের মতো আক্রমণের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম বিবিসি আজ (২৮ নভেম্বর) শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
শুক্রবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ওই মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত গবেষণা ও উদ্ভাবনী সংস্থার প্রধান মোহসিন ফাকরিজাদেহকে বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সন্ত্রাসী ও তার দেহরক্ষীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর গুরুতর আহত ফাকরিজাদেহকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে চিকিৎসক দল তাকে বাঁচাতে সবরকম চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। আর কিছুক্ষণ আগে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।’
ইরানের অন্যতম পরমাণুবিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিযাদে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইসরায়েল জড়িত বলে মনে করছেন তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে দুই জন মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা। এ খবর দিয়েছে আমেরিকার প্রভাবশালী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ফাখরিযাদেকে হত্যায় ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হাত রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। ইসরায়েলের লেখক ও সাংবাদিক ইয়োসি মেলম্যানের একটি টুইট রিটুইট করেছেন ট্রাম্প। সেই টুইটে মেলম্যান লিখেছেন, তেহরানের পূর্বদিকে মোহসেন ফখরিজাদেহকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি ইরানের গোপন সামরিক কর্মসূচির প্রধান ছিলেন এবং বহু বছর ধরে মোসাদের টার্গেটে ছিলেন। তার মৃত্যু ইরানের জন্য একটি বড় মনস্তাত্ত্বিক এবং পেশাদার আঘাত।’
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০১৮ সালের একটি অনুষ্ঠানে ইরানবিরোধী আলোচনা করতে গিয়ে বিজ্ঞানী ফাখরিযাদের নাম বার বার উল্লেখ করেছিলেন। সেসময় তিনি হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ‘স্মরণ রাখবেন নামটি হচ্ছে ফাখরিজাদে’।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির সামরিক উপদেষ্টা হোসেইন দেহাগান বজ্রের শক্তিতে হামলাকারীদের পাল্টা আঘাত করার অঙ্গীকার করেছেন।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ টুইটবার্তায় বলেছেন, ইরানি পদার্থবিজ্ঞানীর কাপুরুষোচিত হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েলের হাত থাকার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে এবং এই ঘটনায় বোঝা যায়, যারা এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে তারা নিজেদের অসহায়ত্বের কারণে একটা যুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা করছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ একে আন্তর্জাতিক অপরাধ আখ্যা দিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এর নিন্দা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
টুইটারে জারিফ লিখেছেন, ‘সন্ত্রাসীরা আজ প্রখ্যাত এক ইরানি বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে’। এ ঘটনায় ইসরায়েলের ‘বড় ধরনের সংযোগ’ রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।
২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ইরানের চারজন পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যার শিকার হন। এসব হত্যায় আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইসরায়েল জড়িত বলে অভিযোগ করে আসছে ইরান।