বঙ্গবন্ধুুু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দেওয়া হেফাজতে ইসলামের নবনির্বাচিত যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে চট্টগ্রামে প্রতিহতের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মামুনুল হককে শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) চট্টগ্রামে ঢুকতে না দিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিমানবন্দর, নৌপথ ও সড়কপথে অবস্থান নিবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে ‘জঙ্গিবাদবিরোধী ছাত্র ও যুব ঐক্য পরিষদ’ আয়োজিত সমাবেশ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
নগর ছাত্রলীগের আয়োজনে এই সমাবেশে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ ও আওয়ামী লীগ নেতা এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। সমাবেশে মামুনুল হকের একটি কুশপুতুল দাহ করা হয়।
গত ১৩ নভেম্বর রাজধানীর বিএমএ অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে শানে রিসালাত কনফারেন্সে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে তা অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানান মামুনুল হক। তিনি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি।
শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) হাটহাজারীতে আল আমিন সংস্থা নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত মাহফিলে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের।
তার আগের দিন জঙ্গিবাদবিরোধী এই সমাবেশ থেকে চট্টগ্রামে যেখানেই মামুনুল হককে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
সমাবেশে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, এই বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শুধু চট্টগ্রামে নয় বাংলাদেশের কোথাও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে কটূক্তিকারী মামুনুল হককে সভা করতে দেওয়া হবে না।
নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী ধর্ম ব্যবসায়ী মামুনুল হক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছে তা দেশদ্রোহের শামিল। এরপর তার নাগরিকত্ব থাকতে পারে না। কোনোভাবেই মামুনুল হককে চট্টগ্রামে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। অবশ্যই প্রতিহত করা হবে।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ বলেন, এরা একাত্তরের পরাজিত শক্তি। এরা ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করে, ধর্ম চর্চা করে না। চট্টগ্রাম থেকে বার বার অসাম্প্রদায়িকতাকে প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রাম হয়েছে। এই চট্টগ্রাম থেকে গোলাম আজমকে প্রতিহত করা হয়েছে। সাঈদীর মাহফিল বন্ধ করা হয়েছে। সবাই মিলে আমরা জঙ্গিবাদীদের প্রতিহত করব।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে মন্তব্য মামুনুল হক করেছে তার নিন্দা জানাই। তাকে ধিক্কার জানাই। তাকে চট্টগ্রামের মাটিতে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না।
নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সালাউদ্দিন, ছাত্রলীগ নেতা আরশেদুল আলম বাচ্চু প্রমুখ।
নগর ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হেফাজত নেতা মামুনুল হককে প্রতিহত করতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ১ নম্বর গেইটে অবস্থান নেবেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়া নগরী ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এবং হাটহাজারীতে মহানগর ও উত্তর জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেবেন।