রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন
প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর ২০২০, ১০:২৪ অপরাহ্ণ
যুবলীগ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার বিবাদমান দুই পক্ষের নেতারা দুই মাস পর একমঞ্চে এসেছেন। রোববার (২২ নভেম্বর) নগরীর রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু এবং চার যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম ও মাহবুবুল হক সুমন একমঞ্চে আসলেও তাদের মধ্যকার বিরোধের বরফ গলেনি। মঞ্চে পাঁচ নেতার একে অপরের সাথে কুশল বিনিময় হয়েছে কেবল। কিন্তু একে অপরের সাথে মন খুলে কথা বলেননি তারা।
কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল হক চৌধুরী রাসেলের চট্টগ্রাম আগমন উপলক্ষে রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে সংগঠনটির চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা শাখা যৌথভাবে সংবর্ধনার আয়োজন করে। এ সভায় যোগ দেন নগর যুবলীগের পাঁচ শীর্ষ নেতা।
গত দুই মাস ধরে দূরত্ব বজায় রেখে সাতটি কর্মসূচি পৃথকভাবে পালন করেছে নগর যুবলীগের দুই পক্ষের নেতারা। দুই মাস পর একমঞ্চে এলেও তারা দূরত্ব বজায় রেখেছিলনে। হাসিমুখে তাদের মধ্যে কোনো আলাপচারিতা হয়নি।
নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু রাজনীতি সংবাদকে বলেন, একটা প্রোগ্রামে গেলে নেতাকর্মী সবার সাথে দেখা হয়, কথা হয়। আজকেও সেভাবে সবার সাথে দেখা হয়েছে। অনুষ্ঠানে সবার অংশগ্রহণ স্বাভাবিক ছিল।
নগর যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা রাজনীতি সংবাদকে বলেন, মঞ্চে আহ্বায়কের সাথে কেবল কুশল বিনিময় হয়েছে। এর বাইরে অন্য কোনো কথা হয়নি।
নগর যুবলীগের অপর যুগ্ম-আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ বলেন, আহ্বায়কের সাথে কেবল সৌজন্য বিনিময় করেছি। অন্য কথা বলার পরিবেশ-পরিস্থিতি ছিলো না।
নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী যুবলীগের দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু এবং চার যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম ও মাহবুবুল হক সুমনের সাথে তিনি ইতোমধ্যে পৃথক বৈঠক করেছেন। দুই পক্ষ তার কাছে ঐক্যের ব্যাপারে নমনীয় মনোভাব দেখিয়েছেন বলে তিনি জানান।
কিন্তু রেলস্টেশন চত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যুবলীগের দুই পক্ষের নেতাদের মনোভাব দেখে নেতাকর্মীদের অনেকে বলছেন, তাদের বিরোধের বরফ সহজে গলবে বলে মনে হয় না। তাদের মধ্যে এখনো ক্ষোভের আগুন জ্বলছে। তাদের বরফ গলাতে রেজাউল করিম চৌধরীকে অনেক বেগ পেতে হবে।
গত ৮ মাস ধরে নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুর সাথে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নিয়ে চার যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম ও মাহবুবুল হক সুমনের বিরোধ চলে আসছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর সাবেক মন্ত্রী ও নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এম এ মান্নানের মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচিকে ঘিরে তাদের বিরোধ প্রকাশ্যে আসে।
এম এ মান্নানের কবরে এই পাঁচ যুবলীগ নেতা পৃথকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে একজোট হন চার যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম ও মাহবুবুল হক সুমন। গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন, ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেলের জন্মদিন, ৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবস, ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস এবং সর্বশেষ ১১ নভেম্বর যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পৃথকভাবে পালন করেন নগর যুবলীগের আহ্বায়ক ও চার যুগ্ম-আহ্বায়ক।