রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৬ নভেম্বর, ২০২০ ১১:২১ : অপরাহ্ণ
দুই লাখ লোক যদি দুই দিন রাস্তায় থাকে, বর্তমান সরকার তখন ‘পালিয়ে যাবে’ মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জনগণের যেহেতু ভোটের মাধ্যমে আর পরিবর্তনের সুযোগ নেই। যত দিন এই সরকার আছে ততদিন ভোট কেন্দ্রে সাধারণ নাগরিক যেতে পারবে না। সুতরাং একমাত্র উপায় গণঅভ্যুত্থান। জনগণ যদি রাস্তায় নেমে আসে। দুই লাখ লোক দুইদিন রাস্তায় থাকেন পালিয়ে যাবে তারা (আওয়ামী লীগ সরকার)। সেই সাহস সঞ্চার করে আসুন আমরা আগামী দিনে এই সরকারকে বিতাড়িত করতে রাজপথে আবার নেমে আসি।’
সোমবার (১৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসের তাৎপর্য এবং গৃহবন্দি থেকে নিঃশর্ত মুক্তির করণীয়’ শীর্ষক সভার আয়োজন করে জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদ।
সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী যেখানে এক লাখ ৮৮ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছেন, সেখানে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী পেয়েছেন ৪৬৮ ভোট।
এ নির্বাচনের ফলাফলের প্রসঙ্গ টেনে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আরে বিএনপির এজেন্টই তো হাজারের বেশি। আমাদের কোনো এজেন্ট ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেন না, কোনো ভোটার কেন্দ্রে যেতে পারে না, এমনকি আওয়ামী লীগের সমর্থকরা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে না- এই হল বাংলাদেশের গণতন্ত্র।’
এ সরকারের সময় যেভাবে নির্বাচন হচ্ছে, তাতে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাবেক এ সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘কেন আমরা এই ধরনের নির্বাচনে যাই? যখন নির্বাচনে যাওয়া উচিত না তখন যাই, যখন যাওয়া উচিত তখন যাই না। যেদিন সংসদে যাওয়া উচিত না সেই সংসদে গিয়ে আমরা বসে থাকি। যার জন্য আজকে বিএনপিকে চারশ ভোট দেয়।’
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আপোস করেননি। কিন্তু আমরা অনেকে আপোস করে বসে আছি। আজকে দুঃখের বিষয় খালেদা জিয়ার মতো নেত্রী তিনি বছরের পর বছর জেলে কাটালেন আমরা কী করতে পেরেছি?
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অশনিসংকেত আমি দেখতে পাচ্ছি, বিএনপিকে এখন ডাক দিলে রাস্তায় নামাতে পারে না। এত শক্তিশালী ছাত্রদল ছিল, তাদেরকে রাস্তায় নামাতে পারে না। কেন নামাতে পারে না, এটা আমার জানা নেই, আমি দলের কোনো বিরাট নেতা না, আমি জানি না। ইসলামী মৌলবাদীদের মিছিল দেখেন, তাদের সংখ্যা দেখেন রাজপথে। এই রাষ্ট্র যদি উদার রাজনৈতিক ধারা থেকে বেরিয়ে গিয়ে আবার মোল্লাদের খপ্পরে পড়ে সেজন্য শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ দায়ী থাকবেন। আমরা এই ধরনের পরিস্থিতি চাই না। আমরা চাই, সরকার পরিবর্তন হোক ভোটের মাধ্যমে।’
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ পানিসম্পদ মন্ত্রী থাকার সময় ভারতের সঙ্গে যৌথ নদী কমিশনের তিনটি বৈঠকে একবিন্দুও ছাড় না দেওয়ার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘দুঃখ লাগে, এই বিএনপি এখন ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না। তারা মনে করে ভারত তাদেরকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। কত বড় অধঃপতন হয়েছে আমাদের রাজনীতির।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন খোকনের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সাবেক প্রতিমন্ত্রী আনম এহছানুল হক মিলন, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, কৃষকদলের কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।