রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৩ নভেম্বর, ২০২০ ২:৫৭ : অপরাহ্ণ
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় চার থানায় ৯টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ৪৪৬ জনকে। এর মধ্যে আটক করা হয়েছে ২০ জনকে। আসামিদের বেশির ভাগ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী।
মামলার এজাহারে জানা যায়, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাগুলো করা হয়েছে। এসব মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামিও রয়েছেন।
মতিঝিল থানায় করা মামলায় আসামিদের মধ্যে ঢাকা-৬ আসনের নির্বাচনে বিএনপির পরাজিত প্রার্থী ইশরাক হোসেন রয়েছেন।
শাহবাগ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলাগুলোতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সদস্য সচিব আমানউল্লাহ আমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি এসএম জিলানীসহ প্রায় ৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ভাটারা থানার মামলায় বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের সহসভাপতি শাহনুর আলম ও নজরুল ইসলাম, ছাত্রদলের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান রাজ, সাংগঠনিক সম্পাক রাসেল বাবু, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর ইসলাম মিল্টন, রপনগর থানা যুবদলের সভাপতি জনসহ বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের ৯৫ জনের নাম রয়েছে।
অন্য থানায় দায়ের করা মামলাগুলোতেও বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ বাদী হয়ে মামলাগুলো করেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার ওয়ালিদ হোসেন জানান, মতিঝিলে ২টি, শাহবাগে ২টি, পল্টনে ২টি এবং বংশাল, ভাটারায় ও কলাবাগানে একটি করে মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ও আজ শুক্রবার এসব মামলা হয়।
গতকাল ও আজ মোট ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের মধ্যে মতিঝিলে ১ জন, শাহবাগে ৬ জন, পল্টনে ৯ জন, বংশালে ২ জন ও কলাবাগানে ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে একে একে ৯টি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আগুনে পুড়ে যাওয়া বাসের মধ্যে ৩টি সরকারি। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, দুপুর ১২টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উত্তর পাশে পার্ক করে রাখা একটি সরকারি বাসে প্রথম আগুন দেওয়া হয়। বিকেল সাড়ে ৪টায় ভাটারা এলাকায় আরেকটি বাসে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয়। রাতে আরও একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, দুর্বৃত্তরা যাত্রীবেশে বাসগুলোতে আগুন লাগিয়ে দ্রুত পালিয়ে গেছে। যেসব বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, তাতে ৩ থেকে সর্বোচ্চ ১২ জন যাত্রী ছিলেন। ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনকে (গতকাল অনুষ্ঠিত হয়) কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগ। ঘটনার প্রতিবাদে বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে পৃথক প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল করা হয়।
অন্যদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই ন্যক্কারজনক ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলক। তিনি দলের পক্ষ থেকে এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।