রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৩ নভেম্বর, ২০২০ ১১:০১ : অপরাহ্ণ
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে থমকে যাওয়া ফুটবলে প্রাণ ফিরেছে আজ। দীর্ঘ ১০ মাস পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরেছে বাংলাদেশ। বিরতি কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে নেপালকে হারিয়ে দুর্দান্ত শুরু করল লাল সবুজের দল।
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর নিজেদের মাঠে নেপালের বিরুদ্ধে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। কথা রেখেছেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা। করোনার দীর্ঘ বিরতির পর মাঠে ফিরেই চমক দেখালো জেমি ডের শিষ্যরা।
নেপালের বিপক্ষে জয় যেন ধীরে ধীরে অধরার দিকেই যাচ্ছিল। সর্বশেষ দুটি ম্যাচে হিমালয়ের দেশের কাছে হারতে হয়েছে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। তাই তো বৃহস্পতিবার ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেছিলেন-ম্যাচটি জিততে চাই, জিততে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শুক্রবার হওয়া আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের প্রথমটিতে নেপালকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে গোল করেছেন নাবীব নেওয়াজ জীবন ও মাহবুবুর রহমান সুফিল।
এরআগে সর্বশেষ জয়টি ছিল ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায়। সেটাও ছিল ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ। শুধু তাই নয়, এই জয় দিয়ে নেপালের বিপক্ষে টানা তিন ম্যাচে হারের প্রতিশোধ নিলেন জামাল ভূঁইয়ারা।
এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে নেপালকে পাঁচ বছর পর হারাল বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ প্রীতি ম্যাচে আগামী ১৭ নভেম্বর আবারও সফরকারীদের মুখোমুখি হবে স্বাগতিকরা।
জামাল ভূঁইয়ারা যেন আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা সাজিয়ে বসেন ম্যাচটিতে। যার ফলশ্রুতিতে নাবীব নেওয়াজ জীবন দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে দারুণ গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন বদলি হিসেবে নামা মাহবুবুর রহমান সুফিল।
২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে নেপালের বিপক্ষে হেরে বিদায় নিয়েছিল বাংলাদেশ। গত বছর এসএ গেমস ফুটবলেও নেপালের কাছে হেরেছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। বাংলাদেশের ফুটবলারদের মাথায় ছিল প্রতিশোধের নেশা। শুক্রবার তারা ২-০ গোলের সহজ জয়ে নিয়েছে আগের টানা দুই হারের প্রতিশোধ।
অতীত রেকর্ড অনুযায়ী নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশই ছিল ফেবারিট। জেমি ডে’র শিষ্যরা ফেবারিটদের মতো খেলেই মুজিববর্ষ ফিফা আন্তর্জাতিক সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে। দ্বিতীয় ম্যাচ হবে ১৭ নভেম্বর।
এই ম্যাচ দিয়ে দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরেছে বাংলাদেশ। আর সে ফেরাটা জয়েই রাঙালেন জামাল, জীবন, সুফিলরা। শুরু থেকেই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ছিল বাংলাদেশ। সে চেষ্টা ফল পায় দশম মিনিটেই। সাদউদ্দিনের ক্রসে চলন্ত বলে গোল করেন এ সময়ের দেশসেরা ফরোয়ার্ড নাবিব নেওয়াজ জীবন।
৭৯ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন বদলি খেলোয়াড় মাহবুবুর রহমান সুফিল। রহমত মিয়ার বাড়ানো বল ধরে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে নেপালের বক্সে ঢুকে পড়েন সুমন রেজার পরিবর্তে মাঠে নামা সুফিল। কোন ভুল করেননি তিনি, কোনাকুনি শটে বল পাঠিয়ে দেন জালে।
নেপাল দল চেষ্টা করেছিল ম্যাচে ফিরতে। গোটাদুয়েক ভালো আক্রমণও ছিল তাদের। কিন্তু বাংলাদেশের রক্ষণ দেয়াল ভাঙতে পারেনি নাওয়াং শেরেস্তা-বিক্রম লামারা। দলটির কোচ বালগোপাল মহারজন বলেছিলেন, তারা আগের মতোই ঢাকায় ভালো পারফরম্যান্স করতে চান। কিন্তু মাঠে তাদের চেয়ে বাংলাদেশ ভালো ফুটবল উপহার দিয়েই জয় আদায় করে নিয়েছে।
নেপালে বিপক্ষে ম্যাচে অভিষেক হয়েছে গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকু ও স্ট্রাইকার সুমন রেজার। নেপালের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে অনেকটা তারুণ্য নির্ভর দলই নামিয়েছিলেন জেমি ডে। কোচের আস্থার মর্যাদা রেখে তাকে ২-০ গোলের দুর্দান্ত এক জয় উপহার দিয়েছেন জামাল ভূঁইয়ারা।