রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন
প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর ২০২০, ৫:৩৮ অপরাহ্ণ
স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ভোট আগামী জানুয়ারি মাসে আয়োজন করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ডিসেম্বর মাসে আয়োজনের পরিকল্পনা থাকলেও সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। ডিসেম্বর মাস জুড়ে চট্টগ্রামে পৌরসভা নির্বাচনের সিডিউল থাকার কারণে জানুয়ারি মাসে চসিক নির্বাচন আয়োজনের পথে হাঁটছে ইসি।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ রাজনীতি সংবাদকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
অশোক কুমার দেবনাথ রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘ডিসেম্বর মাস জুড়ে আমাদেরকে পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হবে। এছাড়া ডিসেম্বর মাসে বিজয় দিবস ও বড় দিনের উৎসব রয়েছে। সবমিলিয়ে ডিসেম্বর মাসে চসিক নির্বাচন আয়োজনের সিডিউল খালি নেই। তাই জানুয়ারি মাসেই চসিক নির্বাচন আয়োজন করা হতে পারে।’
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ডিসেম্বর মাসে ধাপে ধাপে চট্টগ্রামের ১১টি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পৌরসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহম্মদ খান রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যেহেতু চসিক প্রশাসকের মেয়াদ রয়েছে, তাই নির্বাচন কমিশনাররা চসিক নির্বাচন নিয়ে তাড়াহুড়া করছেন না। চট্টগ্রামে পৌরসভা নির্বাচনের পরই চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
গত ২৯ মার্চ চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে ২১ মার্চ ভোট স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। গত ৫ আগস্ট চসিকের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে প্রশাসক নিয়োগ দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রশাসকের মেয়াদ রয়েছে।
গত মাসে নির্বাচন কমিশন থেকে চট্টগ্রাম জেলা রিটার্নিং কর্মককর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামানকে চসিক ভোটের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচনী কর্মকর্তাদের তালিকা হালনাগাদ করতে তাঁকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা রিটার্নিং কর্মককর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান রাজনীতি সংবাদকে বলেন, গত মাসে নির্বাচন কমিশন থেকে প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলা হলে ধারণা করেছিলাম ডিসেম্বর মাসে চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এখন ডিসেম্বর মাসজুড়ে চট্টগ্রামে ১১টি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখন শুনা যাচ্ছে জানুয়ারিতে চসিক নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েছে ইসি।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থগিত হওয়া চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বিদ্যমান তফসিলে। তবে নগরীর দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর ওয়ার্ডে পুনঃতফসিল ঘোষণা করা হবে।
নগরীর ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ী ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী ও ৩৭ নম্বর উত্তর মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী মো. হোসেন মুরাদ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাঁরা দুজনই আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী। এ দুটি ওয়ার্ডে পুনঃতফসিল ঘোষণা করবে ইসি।
নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পর বিদ্যমান নাকি নাকি নতুন তফসিলে ভোট হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক মহলে। কিন্তু বিদ্যমান তফসিলেই স্থগিত হওয়া চসিক নির্বাচনের কেবল ভোটের তারিখ ঘোষণা করবে ইসি।
স্থগিত হওয়া চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ছিলেন রেজাউল করিম চৌধুরী। অন্যদিকে বিএনপি থেকে প্রার্থী হন ডা. শাহাদাত হোসেন। অন্য দলের আরো পাঁচজন মেয়র প্রার্থী ছিলেন। এছাড়া ৪১টি ওয়ার্ডে সাধারণ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ৫৫টি পদে ২৬৯ জন প্রার্থী ছিলেন।