শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আঞ্চলিক রাজনীতি

৮ বছর পর মুক্তি পেলেন বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী


আজ সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে মুক্তি পান বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :২০ আগস্ট, ২০২৪ ১১:০২ : পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ ৮ বছর পর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন চট্টগ্রামের বিএনপির আলোচিত নেতা আসলাম চৌধুরী।

আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। এ সময় কারাফটকের বাইরে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী তাকে স্বাগত জানান।

গত ৮ বছরে আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ, অর্থ আত্মসাৎ, চেক প্রতারণা এবং নাশকতার অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়।

সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তাকে রাজধানীর কোতোয়ালী ও শাহবাগ থানায় দায়ের হওয়া নাশকতার দুই মামলায় আদালতে শ্যােন অ্যারেস্ট (একটি মামলায় গ্রেপ্তার থাকা অবস্থায় আরেকটি মামলায় গ্রেপ্তার) দেখানো হয়।

ওই বছরের ৩০ মে এই দুই মামলায় আসলাম চৌধুরীকে জামিন দিয়েছিলো হাইকোর্ট। পরে এই দুই মামলায় জামিনের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ৬ জুন হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে আপিল বিভাগ।

৩ বছর পর এই দুই মামলায় গতকাল সোমবার হাইকোর্টের জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। এতে মুক্তির বাধা কেটে যায় আসলামের।

আপিল বিভাগ জামিন বহাল রাখার আদেশ দেওয়াতে আজ কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে আসেন তিনি।

২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হন আসলাম চৌধুরী। পরদিন ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় (সন্দেহজনক) গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়।

 

একই বছরের ২৬ মে আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। মামলায় তার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্টের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলাদেশের সরকার উৎখাত ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়। পরে এই মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান।

কিন্তু এরপর আসলামের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা ঠুঁকে দেওয়া হয়। ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সহিংসতার ঘটনায় নাশকতার ১৭টি মামলা হয়। এসব মামলায়ও উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিন পান।

২০১৬ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার সময় আসলাম চৌধুরী বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব পদে ছিলেন। পাশাপাশি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ছিলেন তিনি।
গত ২৪ জুন তাকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা করা হয়। তবে এখন উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক পদে আছেন গোলাম আকবর খোন্দকার।

২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারাগার থেকে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছিলেন আসলাম চৌধুরী। নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিদারুল আলম দুই লাখ ৬৬ হাজার ১১৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন।

উল্লেখ্য, আসলাম চৌধুরী ২০০২ সালে জিয়া পরিষদের মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। তিনি তখন জিয়া পরিষদ, চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে ২০০৭ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। জেলা বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতে না হতে দুই বছরের মাথায় জেলার সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন তিনি। পাশাপাশি জায়গা করে নেন কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক পদে। পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল জেলা বিএনপির সভাপতির সিংহাসনে বসেন তিনি। চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি থেকে ২০১৬ সালে তিনি একলাফে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিবের পদে আসীন হন।

রাজনীতিতে আসার আগে এ বিএনপি নেতা বিসিএস ক্যাডারের চাকরি ছেড়ে এফসিএ কোর্স করেন এবং একটি সিমেন্ট কোম্পানির পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন।

আরও পড়ুন: ‘আয়নাঘর’ নিয়ন্ত্রণ করতেন তারিক আহমেদ সিদ্দিক

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর