১৯৭১ সালের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনাকালে কেবলই নিজ দেশের মানুষকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সিএনএন-এর তারকা সাংবাদিক ক্রিস্টিয়ান আমানপোরকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।
প্রশ্ন পর্বের আগে সিএনএন এর খবরের শুরুতে বলা হয়, বাংলাদেশে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূসের সমর্থকরা বলছেন, তিনি ওই দেশের প্রধানমন্ত্রীর টার্গেটে পরিণত হয়েছেন।
আমানপোর প্রশ্ন করেন, বারাক ওবামাসহ ডজন ডজন নোবেলজয়ী আপনার বিরুদ্ধে বিচারিক হয়রানি বন্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে চিঠি লিখেছেন। এসব মামলার পরিণতি কী হতে পারে? আপনি কি জেলে যেতে পারেন?
জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাকে ইতিমধ্যেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। সুতরাং জামিনের মেয়াদ শেষ হলে আমাকে ফের জামিন দিতে পারে, নয়তো আমি সহ অন্য যাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তারা সবাই জেলে যেতে পারি। ৩রা মার্চে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা আরেকটি নতুন মামলা হচ্ছে। আমাদের দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং সহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। ওই মামলায় সাজার মেয়াদ আরও দীর্ঘ। আমরা জানিনা এসব কখন শেষ হবে।’
শেখ হাসিনা কি আপনাকে তার রাজনীতির জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে ভাবছেন-এই প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস ‘আমি জানি না’ মন্তব্য করে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্পষ্টভাবে না করে দেন।
ওয়ান ইলেভেনে তাকে সরকার প্রধান হওয়ার প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি, রাজনীতি করার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।’
সম্প্রতি রাশিয়ার কারাগারে নিহত হয়েছেন দেশটির বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনি। নাভালনির মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ইউক্রেনে অবস্থানরত আমানপোর ড. ইউনূসের কাছে জানতে চান আপনি কি বিদেশে থাকার প্রস্তাব পেয়েছেন?
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমার অনেক বিদেশি বন্ধুই আমাকে দেশত্যাগ করতে বলেছেন। তাদের দেশে থাকার সকল সুযোগ সুবিধাসহ সারা দুনিয়ায় আমার কাজগুলো চালিয়ে নেওয়ার নিশ্চয়তা সহ। আমি ১৯৭১ সালের শেষে (মিডল) টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটি তে অধ্যাপনা করার সময়টায় দেশে ফিরে আসার ঘোষণা দিয়েছিলাম এবং আমি দেশে ফিরেছিলাম। আমি শুধু মানুষকে সাহায্য করতেই ফিরেছিলাম।’