রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১:০৬ : পূর্বাহ্ণ
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
রাত সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর গুলশানের বাসা ফিরোজায় পৌঁছান তিনি।
এর আগে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছান বিএনপি চেয়ারপারসন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, এভার কেয়ার হাসপাতালে নেওয়ার পর খালেদা জিয়ার ফুসফুসের পানি অপসারণ করা হয়। এরপর এক্স-রে, ইসিজি, আল্ট্রসনোগ্রাফিসহ কিছু পরীক্ষা করানো হয়। এরপর তাকে বেশ কিছুক্ষণ সিসিইউতে রাখা হয়। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে মেডিকেল বোর্ড তাকে বাসায় যাওয়ার পরামর্শ দেয়।
খালেদা জিয়া বাসায় পৌঁছার পর সেখানে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে হাসপাতালে চেয়ারপারসনকে নেওয়া হয়। সেখানে কিছুক্ষণ সিসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। পরবর্তীতে মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে আবার বাসায় আনা হয়। ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) অনেকটা সুস্থবোধ করছেন। কিন্তু এখন তার ক্ষণিকের সুস্থতা। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা জন্য নেওয়া গেলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে চিকিৎসকরা মনে করেন। আশা করি, বিদেশ যাওয়ার যে প্রতিবন্ধকতা তা দ্রুত নিরসন হবে।’
এদিকে দলীয় প্রধানের হাসপাতালে যাওয়ার খবরে বিএনপি ও অঙ্গ- সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাসা ও হাসপাতাল এলাকায় ভিড় করেন। হাসপাতালে যাওয়া-আসার পথে নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের সঙ্গে থেকে তার মুক্তি চেয়ে নানা স্লোগান দেন।
এর আগে দীর্ঘ ৫ মাস চিকিৎসা শেষে গত ১১ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
খালেদা জিয়া গত বছরের ৯ আগস্ট হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে নানা শারীরিক জটিলতায় তিনি সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
গত ২৬ অক্টোবর খালেদা জিয়ার পেট ও বুকে পানি বৃদ্ধি এবং লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে ট্রান্সজুগার ইন্ট্রাহেপাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শন্ট (টিআইপিএস পদ্ধতি) নামে পরিচিত হেপাটিক পদ্ধতি সম্পন্ন করেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
২০২১ সালের নভেম্বরে লিভার সিরোসিস ধরা পড়ার পর থেকেই খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন চিকিৎসকরা। ২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে পুরান ঢাকার কারাগারে পাঠানো হয়। পরে একই বছর দুর্নীতির আরেকটি মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে গুলশানের বাসায় অবস্থান এবং দেশ ত্যাগ না করার শর্তে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়। এরপর থেকে একাধিকবার জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।