রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :২ জানুয়ারি, ২০২৪ ৬:২১ : অপরাহ্ণ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১০ (হালিশহর-পাহাড়তলী-খুলশী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলমের প্রতি চট্টগ্রামবাসীর মনে ক্ষোভ আছে বলে মন্তব্য করেছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মনজুর আলমকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি মনে করেন কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, ‘আমি মনে করি, সব প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর কিছু না কিছু যোগ্যতা অবশ্যই আছে। একইভাবে উনারও আছে যোগ্যতা। তিনি ১৭ বছর ধরে কাউন্সিলর ছিলেন। কিন্তু এ সংসদীয় আসনের কাউন্সিলর ছিলেন না। তিনি সিটি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, যা নিয়ে চট্টগ্রামবাসীর মনে ক্ষোভ আছে। এ ছাড়া এক-এগারোর পর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মনজুর আলমের ভূমিকা চট্টগ্রামের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের হৃদয়ে বেদনার দাগ কেটেছিল।’
ভোটের মাঠে থাকা সব প্রার্থীকেই প্রতিদ্বন্দ্বি মনে করেন জানিয়ে নৌকার এই প্রার্থী বলেন, ‘কে কার প্রতিদ্বন্দ্বি সেটা জনগণের ভোটেই প্রমাণ হবে।’
মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, ‘ভোটের প্রচারণা শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম-১০ আসনে প্রার্থীদের মধ্যে এখনো কোনো বাকবিতন্ডতা হয়নি। সমর্থকদের মধ্যেও কোনো মারামারি কিংবা সংঘাত হয়নি। এটা আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়।’
গত উপনির্বাচনে চট্টগ্রাম-১০ আসনে মাত্র ১১ শতাংশ ভোট পড়েছিল, সেটা এবারও হবে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী বলেন, ‘বিশ্বের অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশগুলোর জাতীয় নির্বাচনে ভোট ৬০ শতাংশের বেশি হয় না। চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচন সংসদ নির্বাচনের একেবারে শেষদিকে এসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোট দিলে পরিবর্তন সাধিত হবে না, সে কারণে মানুষ ভোট দিতে উৎসাহ পায়নি, কেন্দ্রে আসেনি।’
মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, ‘উপনির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণের পর আমি চট্টগ্রাম-১০ আসনের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছি। এসব সমস্যা এবং সমাধানের উপায় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আমি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেছি। দায়িত্ব পালনের এ সংক্ষিপ্ত সময়ে আমার নির্বাচনি এলাকার মৌলিক সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানে সচেষ্ট থেকেছি।’
নৌকার এই প্রার্থী বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হলে আওয়ামী লীগ ঘোষিত ইশতেহার বাস্তবায়নে জীবন শক্তি দিয়ে অবিচল থাকার অঙ্গীকার করছি। শৈশব থেকে আমি জনকল্যাণে সর্ব্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে অভ্যস্ত। ৪২ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন কর্মী হিসেবে জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে সমৃক্ত আছি। অঙ্গীকার করছি, চট্টগ্রামকে আধুনিক, স্মার্ট নগরীতে রুপ দিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার দক্ষ-অভিজ্ঞ ব্যক্তি এবং জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয় ও অংশগ্রহণ নিশ্চিতে ভূমিকা রাখবো।’
সভায় নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘উপনির্বাচনে ভোটাররা মহিউদ্দিন বাচ্চুকে ভোট দিয়ে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিয়েছেন। কিন্তু তিনি মাত্র তিন-চার মাস সময় পেয়েছেন। এতো অল্প সময়ে এলাকার সমস্যা সমাধান কারো পক্ষেই সম্ভব না। তারপরও এতে কারো প্রত্যাশা পূরণ না হলে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।’
চট্টগ্রাম সিটির সাবেক এই মেয়র বলেন, ‘উন্নয়নের অগ্রযাত্রার জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। সকল ভোটারের কাছে বিনীত আহ্বান আপনারা প্রধানমন্ত্রী মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়ী করুন।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সহসভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, উপদেষ্টা এ কে এম বেলায়েত হোসেন, চট্টগ্রাম-১০ আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক বদিউল আলম ও সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম ফারুক, মহানগর যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন খোকা প্রমুখ।
আরও পড়ুন: মহিউদ্দিন বাচ্চুকে ঠেকানোর মিশনে নগর আওয়ামী লীগ নেতা!