রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১২ জুলাই, ২০২৩ ১২:২১ : পূর্বাহ্ণ
ঢাকায় আজ দুই প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পৃথক সমাবেশকে ঘিরে উত্তাপ দেখা দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সফরের মধ্যেই দুই দল সমাবেশের ডাক দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে চাইছে। দুই দলই তাদের সমাবেশে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে বলে আশা করছে।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে রাজধানীর নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আজ বুধবার বেলা ২ টায় বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশ শুরু হবে। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
একই দিন পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছে বিএনপির আন্দোলন সঙ্গীরাও।
বছরব্যাপী নানা কর্মসূচির পর ‘ভোটাধিকার’ প্রতিষ্ঠাকে চূড়ান্ত লক্ষ্য ধরে এবার সরকার হটানোর ‘এক দফা’ ঘোষণায় যাচ্ছে বিএনপিসহ বিরোধীরা।
নয়াপল্টনের সমাবেশে সর্বোচ্চ জনসমাগম ঘটাতে চায় বিএনপি।
বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক দফা আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে অর্থপূর্ণ করতে জনসভায় বিপুল উপস্থিতি নিশ্চিত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা মহানগর, জেলা ও বিভাগীয় নেতাদের সঙ্গে প্রস্তুতি সভা করেছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
বিএনপির দলীয় একটি সূত্র জানায়, ঢাকায় সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের আগে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা এই জনসভাকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ‘মাইলফলক’ হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছেন। এর মাধ্যমে দেশের নির্বাচনের ওপর নজর রাখা আন্তর্জাতিক মহলকে একটি ‘বার্তা’ দেয়ার উদ্দেশ্য আছে।
সমাবেশ থেকে কী ধরনের কর্মসূচি আসতে পারে তা নিয়ে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করছে দলটি। বিএনপি নেতা-কর্মীরাও এই বিষয়ে জানেন না।
তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশা, সমাবেশ থেকে হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি আসবে।
আর সিনিয়র নেতারা বলছেন, দীর্ঘদিন বিএনপির আন্দোলন যেভাবে চলমান, ঠিক সেভাবেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচি আসবে। এর মধ্য দিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের পতন ঘটানো হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকার সমাবেশ থেকে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি আসছে: ফখরুল
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘স্মরণকালের সর্বোচ্চ মানুষের উপস্থিতিতে এই সমাবেশ হবে। সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা আসবে।’
এদিকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেইটে বিকেল তিনটায় সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। এতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ‘আমরা লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটাতে চাই। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনার জন্য দলের সাংগঠনিক অবস্থাকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি বিএনপি ষড়যন্ত্রের যে নতুন কর্মসূচি দিয়েছে, তা মোকাবিলা করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের কর্মসূচি থেকে সহিংস ঘটনা যাতে জনগণ প্রতিরোধ করতে পারে, সেই বার্তা দেওয়া হবে।’
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, শান্তি সমাবেশে লক্ষাধিক নেতা-কর্মীর সমাগম ঘটিয়ে রাজপথ যে তাদের দখলেই রয়েছে, বিদেশিদের এমন বার্তা দিতে চায়। আওয়ামী লীগ দেখাতে চায় তাদের বিপুল জনসমর্থন। একই সঙ্গে বিএনপিসহ বিরোধীদের চাপে রাখার বিষয়টি এতে কাজ করবে। তবে আগ বাড়িয়ে সংঘর্ষে না জড়াতে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দলটির নেতারা মনে করছেন, যত দফার আন্দোলনই বিএনপি করুক না কেন, মাঠে আওয়ামী লীগ থাকলে তারা সুবিধা করতে পারবে না। একই সঙ্গে নির্বাচন পর্যন্ত যে দলটিকে তারা রাজপথে ছাড় দেবে না সেটিও আজকের শান্তি সমাবেশের মাধ্যমে প্রমাণ করবে।