১১১ বছর আগে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যাওয়া টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে ডুবোযান টাইটান ‘ভয়ংকর বিস্ফোরণে’ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড।
ইউএস কোস্টগার্ড জানিয়েছে, হাজার হাজার ফুট পানির নিচে বিস্ফোরণ হওয়া সাবমেরিন টাইটানের পাঁচজন ক্রুর কেউই আর বেঁচে নেই।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তা রিয়ার এডমিরাল জন মাগার বলেন, টাইটানের ৫টি বড় টুকরো পাওয়া গেছে। ধ্বংসস্তূপের যে চিত্র পাওয়া গেছে তা ‘বিপর্যকর বিস্ফোরণের’ সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
রিমোট অপারেটেড ভেহিকেলের (আরওভি) মাধ্যমে ২২ জুন পানির নীচে পাওয়া ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা করার পর ইউএস কোস্টগার্ড সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, ওই ধ্বংসাবশেষ টাইটানেরই।
ইউ এস নেভির কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেন, সাবমেরিনটির যে শব্দ রেকর্ড করা হয়েছিল, তা আসলে টাইটানের প্রেসার চেম্বারের বিস্ফোরণেরই আওয়াজ।
ইউএস কোস্টগার্ডের কর্মকর্তা রিয়ার এডমিরাল জন মাগার বলেছেন, ‘ওই পাঁচজন আরোহীর লাশ হয়ত কখনও মিলবে না। কারণ সেখানে পরিবেশ অবিশ্বাস্যরকম নির্মম।’
নিখোঁজ ডুবোজাহাজ টাইটানে পাঁচজন আরোহীর মধ্যে রয়েছেন-ব্রিটিশ ব্যবসায়ী হামিশ হার্ডিং, ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ ও তার ছেলে সুলেমান, ফরাসি অভিযাত্রী পল-হেনরি নারজিওলেট ও ওশানগেটের প্রধান নির্বাহী স্টকটন রাশ।
ট্রাকের আকারের টাইটানের দৈর্ঘ্যে ছিল ২২ ফুট। গত ১৮ জুন যাত্রা শুরুর ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরে কানাডিয়ান গবেষণা জাহাজ পোলার প্রিন্সের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে টাইটানের আনুমানিক ৯৬ ঘন্টা অক্সিজেন সরবরাহ করার সক্ষমতা ছিল।
যে কারণে বেশ তোড়জোড়ের সঙ্গেই এর খোঁজাখুঁজি শুরু করে ইউএস কোস্টগার্ড।
বৃহস্পতিবার আটলান্টিকের তলদেশে রোবটযানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়ার খবর আসার পর জানা যায়, ওই ধ্বংসাবশেষ আসলে টাইটানের বহিরাংশ থেকে খুলে পড়া অংশ।
মিশনটির অপারেটর ওশানগেট এক্সপেডিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই ব্যক্তিরা সত্যিকারের অভিযাত্রী ছিলেন, যারা সাহসিকতার একটি স্বতন্ত্র চেতনা ও বিশ্বের মহাসাগরগুলো অন্বেষণ এবং রক্ষা করার জন্য গভীর আবেগ শেয়ার করে নিয়েছিলেন। আমাদের হৃদয় এই দুঃসময়ে এই পাঁচটি প্রাণ এবং তাদের পরিবারের প্রতিটি সদস্যের সঙ্গে রয়েছে। আমরা তাদের পরিচিত সকলের প্রতি শোকাহত।’