শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আঞ্চলিক রাজনীতি

আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে: ফখরুল


বগুড়ার সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিনিধি, বগুড়া প্রকাশের সময় :১৯ জুন, ২০২৩ ৭:০২ : অপরাহ্ণ

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে। আমাদের দফা এক দাবি এক শেখ হাসিনার পদত্যাগ।’

আজ সোমবার বিকেলে বগুড়ার সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনে তরুণ প্রজন্মকেও জাগ্রত করতে দেশের ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তারুণ্যের সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপির তিন সংগঠন। যা গত বুধবার চট্টগ্রাম বিভাগে সমাবেশের আয়োজনের মাধ্যমে শুরু হয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতা ও মন্ত্রীদের কথা শুনে ঘোড়া হাসে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার বেসামাল হয়ে পড়েছে। কখন কী বলে বুঝা যায় না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে তরুণ-যুবকদের বুঝতে হবে যে, তোমরা দেশের পরবর্তী প্রজন্ম। দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আজ বিপন্ন। এসব পুনরুদ্ধার করতে হলে তোমাদেরকে নেতৃত্ব দিতে হবে। দেশ আজ চরম বিপদের সম্মুখীন। এমন সংকটে বাংলাদেশ কখনো পড়েনি। আমরা এই সংকটকালে তরুণ প্রজন্মের ওপর আস্থা রাখতে চাই। আজকে কে আছো জোয়ান হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যত—যেটা আমাদের জাতীয় ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখে গেছেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে দেশ পরিচালনা করছে সরকার। আবার তারাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে। তারা ২০০৮ সালে ছলচাতুরির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে একতরফা ও ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছে। আজকে সরকার রাজনৈতিক কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীদের চাকরি দিতে পারে না। কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে না। আসলে তারা করবে কীভাবে তারা তো লুটপাট ও বিদেশে টাকা পাচার এবং বেগম পাড়ায় বাড়ি বানাতে ব্যস্ত। তাদের লক্ষ্য হলো লুট করা।’

সরকারের উন্নয়নের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কয়েকটা ফ্লাইওভার ও কয়েকটা সেতু বানালেই কী উন্নয়ন? উন্নয়ন হলো যখন দেশের সব মানুষ সুখে শান্তিতে বসবাস করে। কিন্তু এখন সরকার নিজেরা শুধু বড় লোক হচ্ছে। তারা ১০ টাকা কেজি চাল ও ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু সেটা দিতে পারেনি। আসলে তারা প্রতারণা করে আসছে। টাকা ছাড়া এখন চাকরি হয় না।’

সরকার ঘোষিত বাজেটের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘হীরক রাজার দেশে যেমন ইচ্ছে তেমনভাবে দেশ চালাতো। কিন্তু পরে জনগণ বিদ্রোহ ঘোষণা করে বলল দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান। এই সরকারও তেমন। সময় এসেছে এদেরও খান খান করে দিতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার এতো কাপুরুষ ও ভীত যে সমাবেশে আসার জন্য গাড়ি ঘোড়া বন্ধ করে দিয়েছে। আজকে প্রধানমন্ত্রী আবোল তাবোল বলছেন। তিনি নাকি কাউকে ভয় পান না। আবার প্রধানমন্ত্রী বিদেশ থেকে ফিরে এসে বলেন, তাকে নাকি আমেরিকা ক্ষমতায় দেখতে চান না। আসলে ক্ষমতাসীনদের কথা শুনে ঘোড়া হাসে। তারা বেসামাল হয়ে পড়েছে। কখন কী বলে বুঝা যায় না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে সরকার বিদ্যুৎ নাকি তারা খুবই উৎপাদন করেছে। তাহলে বিদ্যুৎ গেল কোথায়। আসলে এরা পুরো দেশটাকে খেয়ে ফেলেছে। তাই বলব আজকে সময় হলো তরুণদের। তরুণ প্রজন্মকে আবারও ভোটাধিকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ভাতের অধিকার আন্দোলন সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন আমাদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমান।’

স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এসএম জিলানীর সভাপতিত্বে সমাবেশ পরিচালনা করেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।

তরুণ সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সিনিয়র সহসভাপতি মামুন হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, বগুড়া জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী রিগ্যান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান, জেলা যুবদলের সাবেক নেতা মাহফুজুর রহমান রিটন, জাহাঙ্গীর হোসেন, রাকিবুল ইসলাম শুভসহ অনেকে।

এ ছাড়া তরুণ সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধি তথা চাকরি থেকে বঞ্চিত ছাত্র মওদুদ আহমেদ, এইচএম ফজলে রাব্বি, জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় মাকসুদুল আলম, গত তিনটি নির্বাচনে ভোট দিতে না পারা ফারজানা ইয়াসমিন তুলি, নির্বাচন কমিশন থেকে চাকরি হারানো উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম সুমন বক্তব্য দেন।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর