বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২২ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা আন্তর্জাতিক

১২ স্ত্রী, ১০২ সন্তান, ৫৭৮ জন নাতি-নাতনি, অনেকেরই নাম জানেন না মুসা


রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১১:০৯ : অপরাহ্ণ
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মুসা।
Rajnitisangbad Facebook Page

পূর্ব উগান্ডার বুতালেজা জেলার বুগিসা গ্রামের বাসিন্দা মুসা হাসহ্যা কাসেরা। তার ১২ জন স্ত্রী, ১০২ সন্তান এবং ৫৭৮ জন নাতি-নাতনি রয়েছেন। তাদের বেশিরভাগের নাম মনে করতে পারেন না তিনি।

পরিবারের সদস্য সংখ্যা তার কাছে এখন যথেষ্ট মনে হচ্ছে এবং তাদের জন্য খাবার সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

৬৮ বছর বয়সী মুসা এএফপিকে বলেছেন, ‘প্রথমে এটি একটি রসিকতা ছিল … কিন্তু এখন এটি সমস্যা সৃষ্টি করেছে। দিন দিন আমার স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যাচ্ছে এবং এত বড় পরিবারের জন্য মাত্র দুই একর জমি যথেষ্ট নয়। আমি খাদ্য, শিক্ষা, পোশাকের মতো মৌলিক জিনিসগুলো বহন করতে পারিনি বলেই দুজন স্ত্রী চলে গেছেন।’

মুসা বলেন, ‘সন্তানের সংখ্যা যাতে না বাড়ে সেজন্য স্ত্রীরা এখন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করছেন। আমার স্ত্রীরা গর্ভনিরোধক ব্যবহার করছেন, কিন্তু আমি তা নই। আর সন্তান চাই না, কারণ দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ থেকে শিখেছি যে, এতোগুলো সন্তান জন্ম দেওয়ার কারণে দেখাশোনা করতে পারি না।’

মুসার ১০২ সন্তানের বয়স ১০ থেকে ৫০-এর মধ্যে। তার সবচেয়ে ছোট স্ত্রীর বয়স প্রায় ৩৫ বছর।

সন্তানদের জন্মের বিবরণ খুঁজতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বড় অপারগতার কারণ হলো, আমি শুধুমাত্র আমার প্রথম এবং শেষ সন্তানের নাম মনে রাখতে পারি। বাকিদের নাম ধরে ডাকতে পারি না। এটির জন্য সন্তানের মায়েরা আমাকে শনাক্ত করতে সাহায্য করে।’

১৯৭২ সালে একটি ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিয়ে করেন মুসা। তখন তার ও স্ত্রীর উভয়ের বয়স ছিল ১৭ বছর। বিয়ের এক বছর পর প্রথম সন্তানের বাবা হন মুসা।

মুসা বলেন, ‘পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতেই ভাই, আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুরা আমাকে বহুবিবাহ এবং অনেক সন্তান জন্মদানের পরামর্শ দিয়েছিলেন।’ এখন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছোট ছোট জরাজীর্ণ বাড়িতে বসবাস করছেন তিনি।

মুসার পরিবারের অনেক সদস্য তাদের প্রতিবেশীদের বাড়িতে কাজ করে অর্থ উপার্জন অথবা খাবার সংগ্রহের চেষ্টা করেন। আবার অনেকে পরিবারের সদস্যদের জন্য পায়ে হেঁটে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে কাঠ এবং পানি সংগ্রহ করেন।

আর বাড়িতে যারা থাকেন, তাদের কেউ বসে, খোশগল্প করে কিংবা গাছের ছায়ায় কার্ড খেলে সময় পার করেন। অন্যদিকে, বাড়ির নারীদের মধ্যে কেউ কেউ মাদুর বুনেন কিংবা পরস্পরের মাথার চুলে বিলি কেটে দেন।

দুপুরের মধ্যাহ্নভোজে থাকে স্থানীয় সিদ্ধ কাসাভা। এই খাবার যখন প্রস্তুত হয়ে যায় তখন মুসা কুঁড়েঘর থেকে বেরিয়ে আসেন; যেখানে তার দিনের বেশিরভাগ সময় কেটে যায় এবং পরিবারের সদস্যদের খাবারের জন্য ডাকেন। মুসার ডাকে পরিবারের সদস্যরা খাবার সংগ্রহের জন্য সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যায়।

মুসার তৃতীয় স্ত্রী জেবিনা বলেন, ‘কিন্তু খাবার পর্যাপ্ত নয়। আমরা বাচ্চাদের দিনে একবার কিংবা দু’বার ভালো খাওয়াতে বাধ্য হই।’

তিনি বলেন, যদি জানতেন যে মুসার আরও স্ত্রী আছে, তাহলে তিনি তাকে বিয়ে করতে রাজি হতেন না।

হতাশ কণ্ঠে জেবিন বলেন, ’এমনকি আমি এখানে এসে যখন সবকিছু ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিলাম…তারপরও সে চতুর্থ, পঞ্চম বিয়ে করল। সেটি গিয়ে ঠেকল ১২তম বিয়েতে।’

মুসার দুই স্ত্রী ইতিমধ্যে তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। এছাড়া বাড়ি জনাকীর্ণ হওয়ায় অন্য তিন স্ত্রী মুসার বাড়ি থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরের এক শহরে বসবাস করছেন।

স্ত্রীরা কেন তাকে ছেড়ে যাননি, এএফপির এমন এক প্রশ্নের জবাবে মুসা বলেন, ‘তারা সবাই আমাকে ভালোবাসে। আপনি দেখছেন, তারা সুখী।’

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর