রাজনীতি সংবাদ প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ প্রকাশের সময় :২০ জানুয়ারি, ২০২৩ ৭:১৩ : অপরাহ্ণ
নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় প্রথম দিকে ক্রেতাদের চাপ ছিল কম। এতে দুশ্চিন্তায় ছিলেন বিক্রেতারা। শেষ পর্যন্ত খরা কাটিয়ে বাড়ছে ক্রেতার সংখ্যা। বিশেষ করে ছুটির দিনে লোকে লোকারণ্য থাকে মেলা।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবার মেলার ২০তম দিনে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ঢল নামে। তীব্র শীত উপেক্ষা করে বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে এসেছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। সব বয়সের ক্রেতা ও দর্শনার্থীর পদচারণায় জমে উঠেছে এই বাণিজ্য মেলা।
দুপুরের পর থেকেই যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই মেলায়। মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থী বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে কেনাকাটাও।
মেলা পুরোদমে জমে ওঠায় ব্যবসায়ীদের মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মেলার গেটে ঢুকেই কেউ ছবি তুলছেন, কেউ বা মোবাইল ভিডিও লাইভে স্বজনদের দেখাচ্ছেন মেলা প্রাঙ্গনের দৃশ্য। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। পাশাপাশি কেনাকাটাও করছেন। পছন্দের জিনিসপত্র কিনছেন দরদাম করে।
দেশি-বিদেশি পণ্যের প্রচার, প্রসার ও বিক্রিতে পূর্ণাঙ্গ রূপ পেয়েছে এবারের বাণিজ্য মেলা।
মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, মেলার অভ্যন্তরীণ প্যাভিলিয়ন ও স্টলগুলো কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। খাবার, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, ক্রোকারিজ পণ্য, দেশীয় পোশাক, হস্তশিল্পজাত পণ্য, সাজসজ্জার সামগ্রী, ইলেকট্রনিক পণ্য, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ ও ইমিটেশন জুয়েলারি পণ্যের স্টলের সামনে ক্রেতাদের বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া ব্লেজারের শো রুমগুলোতে দেওয়া হয়েছে বিশেষ ছাড়।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, মেলায় এখন যারা আসছেন তাদের বেশির ভাগই কিছু না কিছু কিনছেন। ফলে কেনাকাটাও হচ্ছে প্রচুর। মেলার বাকি কদিন ভালো বেচাকেনা হবে বলে আশা তাদের।
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, গতবারের তুলনায় এবার মেলায় জিনিসপত্রের দাম বেশি।
আরও পড়ুন: ঢাকা বাণিজ্য মেলায় কোটি টাকার রাজকীয় খাট, কী আছে এতে?
রাজধানীর মিরপুর থেকে পরিবার নিয়ে কেনাকাটা করতে আসা হাসানুজ্জামান শিশির বলেন, দাম বেশি চাওয়ায় এখনো তেমন কেনাকাটা করা হয়নি। তবে পরিবারের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে নিয়ে যাবো।
আশরাফুল আলম নামে এক ব্যবসায়ী জানান, গতবার মেলায় প্রথম দিকে ক্রেতাদের চাপ কম ছিল। শেষ দিকে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ে। এবারও প্রথম ৭-৮ দিন বেচাকেনা ছিল খুবই কম। কিন্তু সপ্তাহ খানেক পর থেকে মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়ে চলেছে। আশা করছি, মেলা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত ক্রেতাদের এমন ভিড়ই থাকবে।
বাণিজ্য মেলার পরিচালক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী জানিয়েছেন, মেলায় প্রতিদিন ক্রেতা ও দর্শনার্থীর সংখ্যা থাকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার। তবে আজ শুক্রবার রেকর্ড সংখ্যক দর্শনার্থী হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা বাণিজ্য মেলায় এক কলমের দাম ২৬ হাজার টাকা!
এবারের মেলায় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, হংকং, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, নেপালসহ ১২টি দেশের ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন।
মেলায় ১৭টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। মেলায় দেশ-বিদেশের মোট ৩৩১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে।
গত ১ জানুয়ারি থেকে চলছে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এ মেলার আয়োজন করেছে।
এবার ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার প্রধান ফটক করা হয়েছে মেট্রোরেলের আদলে।
আরও পড়ুন: এবার বাণিজ্য মেলায় আয় হবে কত, জানালেন বাণিজ্যমন্ত্রী
মেলা উপলক্ষে কুড়িল থেকে মেলার ভেন্যু পর্যন্ত যাত্রীদের আনা-নেওয়ার জন্য ৫০টি শাটল বাস চলাচল করছে। বাসের ভাড়া যাত্রীপ্রতি ৩৫ টাকা, বিকাশের মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধ করলে যাত্রীরা ৫০ শতাংশ ছাড় পাচ্ছেন।
মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রবেশ মূল্য ফ্রি।
মেলা খোলা থাকে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। তবে ছুটির দিনে এক ঘণ্টা বাড়িয়ে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে।