শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা অর্থ-বাণিজ্য

বাণিজ্য মেলায় ছুটির দিনে দর্শনার্থীর ঢল, বিক্রি কম


সাপ্তাহিক ছুটির দিনে জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৬ জানুয়ারি, ২০২৩ ৮:৩১ : অপরাহ্ণ

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। রাজধানীর অদূরে পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে আজ শুক্রবার দুপুর থেকেই হাজার হাজার দর্শনার্থীর ঢল নামে মেলা প্রাঙ্গণে।

তবে মেলায় আগতদের অধিকাংশই কেবল ঘুরতে এসেছেন-এমন মন্তব্য বিক্রেতাদের।

আজ দিনভর মেলা প্রাঙ্গণে অসংখ্য মানুষের উপস্থিতি চোখে পড়ে, বিশেষ করে এক্সিবিশন সেন্টারের ভেতরের চেয়ে বাইরের স্টলে মানুষের ভিড় বেশি দেখা যায়।

প্রথম দিন থেকে পঞ্চম দিন পর্যন্ত মেলায় দর্শনার্থীর খরা চললেও আজ হাসি ফুটেছে বিক্রেতাদের মুখে। তবে ঢাকায় বাণিজ্য মেলার আসরে প্রথম সাপ্তাহিক ছুটির দিনের চেয়েও বেশি মানুষের উপস্থিতি দেখা যেত বাণিজ্য মেলায়-এমন মন্তব্য করেন নিয়মিত স্টল বসানো বিক্রেতারা।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীর ভিড় মেলা প্রাঙ্গণে। দর্শনার্থীদের মধ্যে নারীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। স্টলগুলোর মধ্যেও এর পার্থক্য ছিল দৃশ্যমান।

নারীদের পোশাক, কসমেটিকসের দোকানগুলোতে বাড়তি ভিড় দেখা যায়। এর বাইরে রুটি মেকার, সবজি কাটার, ক্রোকারিজ, জুয়েলারি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের খাবারের দোকানে দর্শনার্থীদের আগ্রহ দেখা গেছে।

মেলায় নারায়ণগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা ফারুক হোসেন বলেন, ‘সাপ্তাহিক ছুটির দিন পেয়ে পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছি। পথটা একটু কষ্টের, কিন্তু মেলার পরিবেশ ভালো। আজ তেমন কিছু কেনা হবে না, যা কিনব সব শেষ সপ্তাহে। পুরোটা ঘুরে দেখার জন্যই আজকে মেলায় আসা। শেষ দিকে ছাড় পাওয়া যায়, তাই শেষ সপ্তাহে কেনাকাটা করি।’

আরেক দর্শনার্থী হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার হিসেবে তত ভিড় নেই মেলায়। মানুষ এসেছে অনেক, কিন্তু তেমন জমেনি। হয়তো দিন দশেক পরে মেলা জমবে। তা ছাড়া একই ধরনের পণ্য বেশি। একটু আকর্ষণীয় বা ভিন্নতা নিয়ে আসা স্টলের সংখ্যা খুবই কম। নতুনত্বের দেখা না পেলে একঘেয়ে লাগে।’

মেলায় এটলাস টয়লেট্রিজের বিক্রেতা ইয়াকুব বলেন, ‘সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেলায় মানুষ বেশি, কিন্তু বিক্রি ততটা নেই। সব দোকানেই একই অবস্থা। মানুষ দেখছে বেশি, কিনছে কম। সবাই পণ্য দেখে দেখে চলে যায়। হয়তো পরের শুক্রবার ভালো বেচাকেনা হবে।’

ফ্র্যাগরেন্স এলিট স্টলের বিক্রেতা রাফি জামির বলেন, ‘দর্শনার্থীরা ভিড় জমিয়ে দেখছেন। সেভাবে বেচাকেনা নেই। তবে মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধির জন্যই তো মেলার প্রদর্শনী। সেটা হচ্ছে, এতেই খুশি।’

আরও পড়ুন: এবার বাণিজ্য মেলায় আয় হবে কত, জানালেন বাণিজ্যমন্ত্রী

এদিকে মেলা শুরুর ষষ্ঠ দিনেও দেখা গেছে স্টল মেরামত ও নির্মাণের কাজ। বেশ কিছু স্টলে এখনো কাঠ, বৈদ্যুতিক ও রঙের কাজ করতে দেখা যায়। মেলার প্রথম শুক্রবারে এসেও এমন চিত্র দেখে বিরক্ত হন অনেকে।

মেলার ভেতর শিশুদের জন্য স্থাপিত পার্কে আজ বিকেল থেকে ছিল উপচে পড়া ভিড়। মেলায় আগত শিশুদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল এই পার্ক।

কিন্তু দর্শনার্থীদের বাড়তি চাপ বুঝে প্রতিটি রাইডের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ছিল অভিভাবকদের; বিশেষ করে ৬০ টাকার রাইড ১০০ টাকা, ৮০ টাকার রাইড ১৫০ টাকা রাখার অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া রাইডগুলোর জন্য কোনো নির্ধারিত মূল্য না রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে।

এবারের মেলায় এক্সিবিশন সেন্টারের ভেতরে ও বাইরে সব মিলিয়ে ৩৩১টি স্টল রয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে ৫৭টি, ফুড কোর্ট রয়েছে ২৩টি। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একাধিক স্টল রয়েছে মেলাজুড়ে।

ছুটির দিনে মেলার সার্বিক বিষয়ে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ও বাণিজ্য মেলার পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যেই দর্শনার্থী প্রত্যাশা করেছিলাম, সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। আজ প্রায় এক লাখ দর্শনার্থীর সমাগম হয়েছে মেলায়। কয়েক দিনের শৈত্যপ্রবাহের কারণে ব্যবসায়ীরা তেমন বিক্রি করতে পারেননি। আশা করছি, এখন থেকে ধারাবাহিক লোকজন আসবে।’

শিশুপার্কে বাড়তি টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী রোববার এ বিষয়ে আমাদের মিটিং রয়েছে। সেদিন এই রাইডের ভাড়া চূড়ান্ত করা হবে। এর পাশাপাশি খাবারের দামেও কিছু অভিযোগ পেয়েছি। আশা করছি রোববারের পর সব মূল্যতালিকা টাঙালে এ সমস্যা আর থাকবে না।’

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর