শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আঞ্চলিক রাজনীতি

ওয়াদা করেন আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেবেন, যশোরে জনসভায় শেখ হাসিনা


যশোরে আওয়ামী লীগের জনসভায় বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিনিধি, যশোর প্রকাশের সময় :২৪ নভেম্বর, ২০২২ ৪:১৮ : অপরাহ্ণ

যশোরে জনসভায় উপস্থিত জনগণকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচনে আমি আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই, আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আপনাদের সেবা করার সুয়োগ দেবেন কিনা, আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করেন। এ সময় উপস্থিত জনগণ হাত তুলে ওয়াদা করেন।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোর শামস-উল হুদা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে সকাল থেকে যশোরের বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের জেলা থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ সমাবেশস্থলে সমবেত হন। জনসভা রূপ নেয় জনসমুদ্রে।

দেশের ব্যাংকগুলোতে যথেষ্ট টাকা রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকগুলোতে টাকা নেই বলে অনেকে মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে। আমি আপনাদের বলছি, ব্যাংকে পর্যাপ্ত টাকা রয়েছে। কেউ কেউ ব্যাংক থেকে টাকা তুলছে। ব্যাংকে থেকে টাকা তুলে ঘরে রাখলেতো চোরে নিয়ে যাবে। চোরের জন্য সুযোগ করে দেওয়া।’

বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ কর্মকার্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘টাকা নিয়ে কোনো সমস্যা নাই। প্রত্যেকটা ব্যাংকে যথেষ্ট টাকা আছে। আমাদের রেমিট্যান্স আসছে। বিদেশ থেকে বিনিয়োগ আসছে। আমদানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। ট্যাক্স বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক মন্দায় অন্য দেশগুলো যেখানে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের অর্থনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী আছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘রিজার্ভ নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনা শুনছি। অনেকে প্রশ্ন করেন রিজার্ভ গেলো কোথায়? আমরা তো রিজার্ভ অপচয় করিনি। মানুষের কল্যাণে কাজে লাগিয়েছি। জ্বালানি তেল কিনতে হয়েছে, খাদ্যশস্য কিনেছি। বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। করোনার টিকা ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেছি। এসব কাজে রিজার্ভ থেকে খরচ করতে হয়েছে আমাদের।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে সারা পৃথিবীতে অর্থনৈতিক মন্দা। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এখনো আমরা শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমি দেখি কেউ কেউ রিজার্ভ নিয়ে কথা বলে। রিজার্ভের কোন সমস্যা নাই।’

ওয়াদা করেন আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেবেন, যশোরের জনসভায় শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অনেক উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছিলাম। তবে করোনা আর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে মন্দা দেখা দিয়েছে। সেই প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। এই প্রভাব কিভাবে কাটানো যায়, সে ব্যপারে আমরা যথেষ্ট সজাগ আছি। আমি এইটুকু বলতে পারি আমাদের অর্থনীতি এখনো সচল আছে, নিরাপদে আছে।’

মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে বিএনপি নিজেদের উন্নয়ন করেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) কিছুই দিতে পারে না, শুধু পারে মানুষের রক্ত চুষে খেতে। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান টাকা পাচার করেছে, তার সাজা হয়েছে। অস্ত্র চোরাচালান করেছে, গ্রেনেড হামলা করেছে। খালেদা জিয়াও সাজাপ্রাপ্ত। যারা সাজাপ্রাপ্ত তারা দেশকে কী দেবে? তারা শুধু মানুষের রক্ত চুষে খেতে পারে।’

জনসভায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে ‘বেইমানের’ দল উল্লেখ করে বলেন, ‘বিশ্বাসঘাতকের দল। এরা ১৫ আগস্টে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করেছে। খুনিদের দায়মুক্তি দিয়ে আইন করেছে। এরা খুনি, ঘাতক।’

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির আরেক নাম বাংলাদেশ নালিশ পার্টি। বিশ্বাসঘাতকের অপর নাম জিয়াউর রহমান। তিনি যদি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত না থাকতেন তাহলে কারও সাহস ছিল না বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে। বেইমানের দল, বিশ্বাসঘাতকের দল, ঘাতকের দল বিএনপি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকা শহরে বড় বড় লোকেরা বাসায় কুকুর রাখে, আর বাড়ির সামনে লিখে রাখে কুকুর হতে সাবধান। আমরা বলি বিএনপি থেকে সাবধান। তারা যখন ক্ষমতায় ছিল বিদ্যুৎ, রিজার্ভ ও গণতন্ত্র গিলেছে। ভোট চুরি করেছে। তারা যদি আরেকবার ক্ষমতায় আসে গোটা বাংলাদেশ গিলে খাবে।’

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ প্রমুখ।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর