রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৯ অক্টোবর, ২০২২ ৬:১৯ : অপরাহ্ণ
আওয়ামী লীগ নেতাদের কটাক্ষ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আপনারা চিতল মাছ খাচ্ছেন, ঘনঘন বিদেশ যাচ্ছেন। আরাম–আয়েশ করছেন। আর সাধারণ মানুষ না খেয়ে থাকে। মুখে বলবে একটা, অন্তরে আরেকটা। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগ।’
আজ শনিবার বিকেলে রংপুরের ঐতিহাসিক কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পরিবহন ধর্মঘটের মধ্যেও বিএনপির এই সমাবেশে লাখো মানুষের ঢল নামে।
নেতা–কর্মী ও সমর্থকরা কষ্ট করে সমাবেশে আসায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রংপুরের জেলাগুলোর সব নেতা–কর্মী ও সমর্থকরা, যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে অসাধ্য সাধন করেছেন তাদের স্যালুট জানাই।’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর বড়শিতে ধরা পড়লো বড় চিতল মাছ
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘কেন এই সমাবেশ, কারণ একটাই-সরকার ১৫ বছর ধরে দমন করতে, অত্যাচার চালিয়ে সর্বনাশ করেছে। সমস্ত দেশটাকে পুড়ে পুড়ে খেয়েছে। চিবিয়ে চিবিয়ে অর্থনীতিটা খেয়ে ফেলেছে। এখন বাংলাদেশ খাওয়ার পাঁয়তারা করেছে। সমস্ত স্বপ্ন নষ্ট করে দিয়েছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে চুরি করে। রাস্তা, ব্রিজ, গরিব মানুষের ঘর তুলে দিয়েছে, আশ্রয়ণ প্রকল্প করছে সেখানেও চুরি করে। তারা সব খেয়ে ফেলেছে। কিছু বাকি রাখে নাই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সামনে কঠিন সময়, দুঃসময়, আমরা কোথায় যাবো? যিনি দেশের প্রধান, যদিও নির্বাচিত সরকার নয়-উনি বলেন দুর্ভিক্ষ হবে। যদি হয়, সমস্ত দায় শেখ হাসিনা ও তার সরকারের।’
এ সময় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘১৯৭৪ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলেও দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। মানুষ খাবার খেতে না পেরে রাস্তায় পড়েছিল। এই রংপুরের বাসন্তি লজ্জা নিবারণের জন্য এক টুকরো কাপড় পায়নি। এখন আবার সেই অবস্থা ফিরে এসেছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতার নাম শেখ হাসিনা: কাদের
সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এতো দিন কী করলেন? দেশ মধ্য আয়ের হয়েছে, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া হয়ে গেছে অথচ মানুষ খাওয়া পায় না। ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়ানোর কথা ছিল আর এখন কত? ৯০ টাকা। ডিম কত? ১৩৫–১৪০ টাকা। চিনির দাম ১৩০ টাকা। কী খেয়ে থাকবে মানুষ?
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সমগ্র বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অনেক মিডিয়া এই সমাবেশের দিকে তাকিয়ে আছে। সরকার নাকি জনগণকে ভয় পায় না। ভয় না পেলে গাড়ি কেন বন্ধ করতে হয় ? কেন আমাদের নেতাদের গুলি করে মারো?’
সমাবেশে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সবার বিরুদ্ধে মামলা। ৩৫ লাখ মামলা। আমাদের ৬০০ নেতা-কর্মীকে গুম করেছে এই সরকার। সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করেছে। আলেম-ওলামাদের মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করেছে। এদের কি আর ক্ষমতায় থাকতে দেয়া যায়?’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের সোজা কথা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আমরা কোনো নির্বাচনে যাব না। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ছাড়া কোনো নির্বাচনে যাব না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন হবে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় গিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে।’
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে দলের নেতা-কর্মীদের মৃত্যুর প্রতিবাদসহ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দেশের সব বিভাগে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনার পর আজ রংপুরে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।