প্রতিনিধি, রংপুর প্রকাশের সময় :২৫ অক্টোবর, ২০২২ ৬:৪১ : অপরাহ্ণ
ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণে কারচুপি, সরকারী দলের প্রভাব বিস্তার, রেজাল্ট ছিনতাইয়ের শঙ্কা সত্যি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
তিনি বলেন, ‘ইভিএমে সুষ্ঠু ভোট হয় না, এবার নতুন নির্বাচন কমিশনার নিজেই বলেছেন। গাইবান্ধা উপনির্বাচনে সেটা প্রমাণিত হয়েছে। ইভিএমের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে খোদ নির্বাচন কমিশনই।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর নগরীর দর্শনাস্থ পল্লী নিবাসে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘ইভিএমে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, এটা আমরা আগে থেকেই বলে আসছি। ইভিএমের মাধ্যমে সরকারি দল প্রভাব বিস্তার করে নানাভাবে রেজাল্ট ছিনতাই করতে পারে। সাধারণ নির্বাচনে সরকারি দল এখন প্রতিনিধিত্ব করছে, সরকারি দলের অধীনে সব কিছু থাকায় তারা ক্ষমতা দেখিয়ে থাকে। রেজাল্ট নিজের পক্ষে নিয়ে যেতে পারে। এসব কথা আমরা সব সময় বলে আসছি। এর আগেও আমরা যে কথাগুলো বলেছিলাম, সেগুলো সত্য প্রমাণিত হয়েছে।’
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিএনপির সাথে জাতীয় পার্টির জোটের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। নির্বাচনের কাছাকাছি সময় পরিস্থিতি দেখে তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতাদের পরামর্শে বিএনপির সাথে জোট বাধার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখন আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে কাজ করে যাচ্ছি।’
জাতীয় পার্টি থেকে অব্যাহতি পাওয়া নেতা মসিউর রহমান রাঙ্গার মন্তব্যের বিষয়ে জি এম কাদের বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে তারা অবান্তর কথা বলছে। এসব নিয়ে মতামত দেওয়াও আমি ঠিক মনে করি না। এ ধরনের ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি। তাই এসব গুরুত্ব দিয়ে দেখছি না।’
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘অর্থনৈতিক প্রভাব যেভাবে সাধারণ মানুষের ওপর পড়ছে, তাতে ব্যয় বেড়েই চলছে। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন, ব্যয় নির্বাহ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এ অবস্থায় সরকারি কিংবা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের মহার্ঘ্য ভাতা চালু করতে হবে। সাধারণ মানুষের জন্য রেশনিং পদ্ধতির মাধ্যমে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সূলভ মূল্যে দিতে হবে।’
জি এম কাদের বলেন, ‘আগামীতে দেশে খাদ্য সংকট হতে পারে। তাই দুর্ভিক্ষের হাত থেকে জনগণকে রক্ষার জন্য সরকারকে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। মেগাপ্রকল্পগুলো বন্ধ করে টাকার সংস্থান করতে হবে। দেশে যেভাবে মুদ্রাস্ফীতি হচ্ছে, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহ করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, অতিরিক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইয়াসির আহমেদ, আবুল মাসুদ নান্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকসহ জাতীয় পার্টি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।