নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ৯:১৮ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রাম নগরীতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের ছবি প্রদর্শন করা নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীতে বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ শোভাযাত্রা বের করা হয়।
নগরীর কাজীর দেউড়ি মোড় থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রাটি নূর আহমদ সড়ক, লাভলেইন, জুবলী রোড হয়ে তিন পোলের মাথায় গিয়ে শেষ হয়।
হাজারো নেতা-কর্মীর অংশগ্রহণে এ শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ শোভাযাত্রায় নেতা-কর্মীদের হাতে দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ফেস্টুন প্রদর্শন করার কথা।
বিএনপির কর্মসূচিতে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা নেতার নামে ছবি প্রদর্শন না করতে নির্দেশনাও রয়েছে।
কিন্তু চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির শোভাযাত্রার অগ্রভাগে নেতা-কর্মীদের একাংশের হাতে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের ফেস্টুন প্রদর্শিত হয়েছে।
শাহাদাত-বক্করের নেতৃত্বে মিছিলের ব্যানারের মধ্যেই কেবল জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি ছিল।
মিছিলের এ দৃশ্য দেখে রাস্তার পথচারী কিংবা সাধারণ মানুষদের অনেকেই মনে করেছেন, এটা আবদুল্লাহ আল নোমানের ‘শোডাউন’।
শোভাযাত্রায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি শওকত হোসেন খাজা ও মহানগরের সিনিয়র সহসভাপতি তোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে যোগ দেওয়া মিছিলের নেতা-কর্মীদের হাতে হাতে নোমানের এসব ফেস্টুন ছিল।
তারা সবাই আবদুল্লাহ আল নোমানের অনুসারী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘শোভাযাত্রায় কিছু নেতা-কর্মীর হাতে আবদুল্লাহ আল নোমানের ফেস্টুন ছিল। তারা নোমান ভাইয়ের নির্বাচনী এলাকার নেতা-কর্মী।’
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দলীয় কর্মসূচিতে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা নেতার নামে ছবি প্রদর্শন না করতে নির্দেশনা আছে। এ নির্দেশনা ভঙ্গ করে যারা আবদুল্লাহ আল নোমানের ছবি প্রদর্শন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবো।’
দলীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, এই মিছিলটি সংগঠিত করার নেপথ্যে ভূমিকা রেখেছেন নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস কে খোদা তোতন। তবে তিনি রাজনীতি সংবাদের কাছে তা অস্বীকার করেছেন।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে লালখান বাজার চট্টগ্রাম ক্লাবের সামনে থেকে শওকত হোসেন খাজা ও তোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে এ মিছিল শুরু হয়। এতে শতাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেন। সেখান থেকে মিছিলটি কাজীর দেউড়ি মোড়ে গিয়ে নগর বিএনপির শোভাযাত্রায় যুক্ত হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহসভাপতি তোফাজ্জল হোসেন রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘আমরা তো নোমান ভাইয়ের গ্রুপ করি। আমরা স্বেচ্ছাসেবক দলে কোণঠাসা অবস্থায় আছি। আমাদেরকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ওদের পকেটের লোক দিয়ে প্রতিটা থানা-ওয়ার্ডে কমিটি করেছে। ওদের একনায়কতন্ত্রের প্রতিবাদে আমরা পৃথকভাবে এই শোডাউন করেছি।’
এদিকে নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম রাশেদ ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলুর নেতৃত্বে পৃথক একটি মিছিল নগর বিএনপির শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।
জানতে চাইলে নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম রাশেদ রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘ওদের (তোফাজ্জল হোসেন) মিছিল তো আমি দেখিনি। তারা কেন পৃথকভাবে মিছিল করেছে তা আমি জানি না। বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো।’
এ বিষয়ে নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রায় দলের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি প্রদর্শন করা হলে শোভনীয় হতো। কিন্তু একজন নেতার ছবি প্রদর্শন করা মোটেও শোভনীয় হয়নি।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চট্টগ্রামে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। দীর্ঘদিন পর বুধবার (৩১ আগস্ট) তিনি নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন।