রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৬ আগস্ট, ২০২২ ৮:১৮ : অপরাহ্ণ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে মাদক সেবনের পরে খালি গলায় উচ্চস্বরে গান গাওয়া নিয়ে বসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এতে শান্ত নামে এক শিক্ষার্থীর মাথা ফেটে যাওয়াসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে হলের প্রধান ভবনের (মেইন বিল্ডিং) মন্ত্রী পাড়ার তিন তলার ছাদে এ ঘটনা ঘটে।
জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা এবং সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেনের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাত ১২টার সময় হলের ছাদে সভাপতি কামালের অনুসারী থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ফরিদ জামান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাকিবুর রহমান সায়েম এবং লোক প্রশাসন বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল হোসেন সাগর মিলে মাদক সেবনের জন্য যান। ছাদে আগে থেকেই সাধারণ সম্পাদক রবেলের অনুসারী পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান রাহি, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের আব্দুর রহিম শান্ত, একাউন্টিং বিভাগের রাজিব রবিনসহ আরও অনেকে বিয়ার সেবন করছিলো।
এসময় রাহি,শান্ত খালি গলায় উচ্চস্বরে গান গাইলে সভাপতি গ্রুপের ফরিদ এসে তাদেরকে চলে যেতে বলে। একপর্যায়ে রাহিকে চড় দেয় এবং পরে এটা নিয়ে দুপক্ষের মাঝে হাতাহাতি শুরু হয়। একপর্যায়ে এসে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এতে মাথা ফেটে যায় সেক্রেটারি গ্রুপের শান্তর। দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা স্টাম্প ও রড নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মহড়া দিতে শুরু করে। ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন প্রকার মাদকের বোতল দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হলের ৪র্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানায়, মাতাল হয়ে রাত সাড়ে ১২টায় গান গাওয়া নিয়ে হলের ছাদে ঝামেলা হয়। এরপর বের হয়ে দেখি সেক্রেটারি গ্রুপের অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী এবং পরে সভাপতি গ্রুপের অন্তত ৫০/৬০ জন শিক্ষার্থী রড, স্ট্যাম্প দিয়ে মারামারি করছে।
এক পর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে কামাল উদ্দিন রানা ও রুবেল ভাই এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে কামাল উদ্দিন রানা বলেন, ছাদে গতকাল রাতে গান গাওয়া নিয়ে সিনিয়র-জুনিয়রদের মাঝে একটু কথা কাটাকাটি হয়। আমরা সেখানে দ্রুত গিয়ে সমাধানের চেষ্টা করি। কিছুক্ষণের মধ্যে পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হয়ে যায়।
মাদকের সেবনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, মাদক নিয়ে ঝামেলা হয়নি। তবে হলের ছাদে বিয়ার বা মদের বোতল থাকতেই পারে। কে বা কারা কখন খেয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেন বলেন, সিনিয়র-জুনিয়রদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি থেকে ঘটনার সূত্রপাত। আমি জানা মাত্রই সভাপতির সাথে আলাপ করে সমাধান করে দিয়েছি। পরে আর কিছু হয়নি।
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রহিম বলেন, আমি সকালে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। রাতে তারা বিষয়টি সমাধান করেছে বলে জানতে পেরেছি। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছি। এছাড়াও হলের ছাদে শিক্ষার্থীরা যাতে শিক্ষার্থী পরিবেশ বহির্ভূত কোনো কাজ করতে না পারে সেজন্য ছাদ বন্ধ করে দিয়েছি।
কিছুদিন আগেও হলের ২য় তলার ২৭৪ নং রুমের সিট দখলকে কেন্দ্র করে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগের এই দুই গ্রুপ। সেই সময়ও রড স্টাম্প নিয়ে মহড়া দিতে দেখা যায় তাদের।