শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা খেলা

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করেই ছাড়লো বাংলাদেশ



রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৭ জুলাই, ২০২২ ৩:০৯ : পূর্বাহ্ণ

সমীকরণটা ছিল খুব সহজ। সিরিজের শেষ ওয়ানডে জিততে বাংলাদেশকে করতে হতো মাত্র ১৭৯ রান। কিন্তু এই সহজ সমীকরণ মেলাতেই বেশ কঠিন পরীক্ষা দিতে হলো বাংলাদেশকে। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো অঘটন হয়নি।

তিন ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করলো তামিম ইকবালের দল। ক্যারিবীয়দের এ নিয়ে ওয়ানডেতে তৃতীয়বারের মতো হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ।

আজ শনিবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে সিরিজের প্রথম ও দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও জিতেছিল বাংলাদেশ। টানা তিন জয়ে ওয়ানডে সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতলো লাল-সবুজের দল।

আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৮.৪ ওভারে ১০ উইকেটে ১৭৮ রান করে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বল হাতে মাত্র ২৮ রান দিয়ে একাই ৫ উইকেট নিয়ে দুই বছর পর ওয়ানডে ক্রিকেটে ফেরাটা রাঙিয়েছেন তাইজুল ইসলাম।

জবাব দিতে নেমে ৯ বল হাতে রেখে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।

রান তাড়ায় নেমে ২০ রানে ভেঙেছিল বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। ১১ বল খেলে প্রথম রানের খাতা খোলা শান্ত দুই বল পরই আলজেরি জোসেফের ডেলিভারিতে এজ হয়ে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মাত্র ১ রানেই।

শান্তকে হারানোর পর লিটন দাসের সঙ্গে ৫০ রানের আরেকটি জুটি (৬২ বলে) গড়েন তামিম। টাইগার দলপতি খেলছিলেন বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। তবে ব্যক্তিগত ৩৪ রানে থামতে হয়েছে তাকে।

৫২ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ইনিংস সাজিয়ে ভুল শট খেলে বসেন তামিম। গোদাকেশ মোতিকে সুইপ করতে গিয়ে ফাইন লেগে ধরা পড়েন বাঁহাতি এই ওপেনার।

তামিম ফিরলেও আরও একবার দারুণ এক ইনিংস বেরিয়ে এসেছে লিটন দাসে উইলো থেকে। ডানহাতি এই ব্যাটার তুলে নেন ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ওয়ানডে ফিফটি।

যদিও ফিফটির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লিটন। গোদাকেশ মোতির দারুণ এক ফিরতি ক্যাচে সাজঘরের পথ ধরেন মারকুটে এই ব্যাটার। ৬৫ বলে গড়া তার ৫০ রানের ইনিংসটি ছিল ৫ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় সাজানো।

এর ঠিক এক বল পরই আরেক ব্যাটার আফিফ হোসেনকেও (০) বোল্ড করে বাংলাদেশকে চাপে ফেলে দেন মোতি। ২৫তম ওভারে ডাবল উইকেট মেইডেন নেন ক্যারিবীয় বাঁহাতি এই স্পিনার।

মোসাদ্দেক হোসেন খেলছিলেন দারুণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। টানা দুই ওভারে একটি করে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে দেন ভালো কিছুর ইঙ্গিত। কিন্তু ১৪ রানেই থামতে হয়েছে ডানহাতি এই ব্যাটারকেও।

দারুণ বোলিং করা মোতিকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে লংঅফ ফিল্ডারের হাতে ধরা পড়েন মোসাদ্দেক। ১১৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত সেই চাপ কাটিয়ে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে টাইগাররা।

এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নেওয়া বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন তাইজুল। দুই বছর ওয়ানডে একাদশে ফেরা তাইজুল নিজের প্রথম দুই ওভারেই নাড়িয়ে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করেই ছাড়লো বাংলাদেশ

ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই ব্রেন্ডন কিংকে বোল্ড করে সাজঘরে পাঠান তাইজুল। নিজের দ্বিতীয় ওভারে তার ঘূর্ণিতে পরাস্ত হন শাই হোপ।

১৫ রানে ২ ওপেনারকে হারিয়ে ধুঁকতে থাকা ক্যারিবীয়দের বিপদ আরও বাড়ান মুস্তাফিজুর রহমান। ব্রুকসকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে সাজঘরে পাঠান কাটার মাষ্টার।

১৬ রানে তিন উইকেট হারিয়ে পুরান-কার্টির ব্যাটে চাপ সামলাচ্ছিলেন উইন্ডিজরা। একসময় বাংলাদেশের পথের কাঁটা হয়ে যাচ্ছিল এই জুটি। অবশেষে নাসুমের স্পিনে ভাঙে এই জুটি। দুজনের জুটিতে ৬৭ রানের সময় নাসুমকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অনে তামিমের হাতে ধরা পড়েন কার্টি।

মিরাজকে ছয় মেরে বড় ঝড়ের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন রভম্যান পাওয়েল। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। পরের ওভারে তাইজুলের বলে ফিরতে হলো তাকে। ২৯ বলে ১৮ রান করে বোল্ড হন তিনি।

এরপরও ওয়েস্ট ইন্ডিজের আশার আলো হয়ে ছিলেন পুরান। তার ব্যাটে বড় কিছুর স্বপ্ন দেখছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলার পর হাত খুলেছিলেন ক্যারিবীয় অধিনায়কও। তবে তাকে বোল্ড করেই নিজের ফাইফার পূরণ করেন তাইজুল।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলআউটের পথে বাধা ছিলেন পুরান। তার বিদায়ের পর তাতে সময় বেশি লাগেনি। ৪ চার ও ২ ছক্কায় ১০৯ বলে ৭৩ রান করে সাজঘরে ফেরত যান পুরান। ৪৮ ওভার ৪ বলে ১৭৮ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

বাংলাদেশের পক্ষে ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে ২ মেডেনসহ ২৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৮.৪ ওভারে ১৭৮ (হোপ ২, কিং ৯, ব্রুকস ৪, কার্টি ৩৩, পুরান ৭৩, পাওয়েল ১৮, পল ৮, আকিল ১, শেফার্ড ১৯, মোটি ২, জোসেফ ৭*; নাসুম ৯.৪-১-৩৯-২, মুস্তাফিজ ৯-০-২৪-২, তাইজুল ১০-২-২৮-৫, মোসাদ্দেক ১০-১-২৩-১, মিরাজ ৮-০-৬১-০, আফিফ ২-১-২-০)।

বাংলাদেশ: ৪৮.৩ ওভারে ১৭৯/৬ (তামিম ৩৪, শান্ত ১, লিটন ৫০, আফিফ ০, সৈকত ১৪, সোহান ৩২, মাহমুদউল্লাহ ২৬, মিরাজ ১৬; আকিল ১০-৩-৪৫-০, মোটি ১০-২-২৩-৪, পুরান ৬-০-৩৫-১, জোসেফ ১০-০-২৫-১, রোমারিও ১০-০-৩৮-০ )।

ফল: ৪ উইকেটে জয়ী বাংলাদেশ।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর