নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৫ জুলাই, ২০২২ ৮:১৫ : অপরাহ্ণ
রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গায়ে আগুন দিয়ে ব্যবসায়ী গাজী আনিসের আত্মহত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন হেনোলাক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী একই গ্রুপের পরিচালক ডা. ফাতেমা আমিন।
আজ মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গতকাল সোমবার বিকেলে প্রেসক্লাবের সামনে গাজী আনিস নিজের গায়ে আগুন দেন। তার গায়ে আগুন জ্বলছে দেখে আশপাশ থেকে সবাই ছুটে যান। তারা পানি ঢেলে আগুন নেভান। তবে ততক্ষণে তার শরীরের বড় অংশ পুড়ে যায়।
পরে তাকে উদ্ধার করে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন আজ ভোর ৬টা ১০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় গাজী আনিসের বড় ভাই নজরুল ইসলাম আজ দুপুরে শাহবাগ থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে হেনোলাক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আমিন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
জানা গেছে, হেনোলাক্স নামে একটি কোম্পানির কাছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা পেতেন গাজী আনিস। এ জন্য তিনি কয়েক দফায় সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে এ টাকা না দেওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।
চলতি বছরের ২৯ মে হেনোলাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ডা. নুরুল আমিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও তার স্ত্রী ডা. ফাতেমা আমিনের বিরুদ্ধে ব্যবসায়িক অংশীদার বানানোর লোভ দেখিয়ে দুই কোটি ২৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন গাজী আনিস। এ সময় টাকা ফেরতসহ তাদের শাস্তি দাবি করেন তিনি।
সেই সংবাদ সম্মেলনে গাজী আনিস জানিয়েছিলেন, ২০১৬ সালে নুরুল আমিন ও ফাতেমা আমিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে ব্যবসায়িক অংশীদায়িত্বের সিদ্ধান্ত নেন তারা। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজী আনিস ব্যবসায় দুই কোটি ২৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে লভ্যাংশসহ মোট তিন কোটি টাকা আনিসকে ফেরত দেওয়া হবে মর্মে চুক্তি হয়। পরে কয়েক দফায় লাভের অংশ থেকে ৭৪ লাখ টাকা তারা আনিসকে দেয়। কিন্ত চুক্তি অনুযায়ী অবশিষ্ট দুই কোটি ২৬ হাজার (লাভসহ) টাকা ফেরত দেয়নি।
ওই সংবাদ সম্মেলনে গাজী আনিস আরও বলেছিলেন, দুই কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে গিয়ে তার সহায় সম্বল সব কিছু বিক্রি করতে হয়েছে। এখন তিনি নিঃস্ব। এ নিয়ে আদালতে দুটি মামলাও করেছেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
৫০ বছর বয়সী গাজী আনিস কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পান্টি বাজার এলাকার মৃত ইব্রাহিম বিশ্বাসের ছেলে।
গাজী আনিস কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তিনি ১৯৯১ সালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৯৩ সালে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি।