নিজস্ব ক্রীড়া প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১ এপ্রিল, ২০২২ ১০:০৯ : অপরাহ্ণ
দ্বিতীয় দিনটি বাংলাদেশের দখলে আসতে আসতেও যেন এলো না! দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩৬৭ রানে অল-আউট করার পর ভালোই প্রতিরোধ গড়েছিল জয়-শান্ত জুটি।
কিন্তু সিমন হার্মারের ঘূর্ণিতে কুপোকাত হয়ে দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৯৮ রান।
আজ শুক্রবার ডারবান টেস্টের প্রথম ইনিংসে টাইগাররা পিছিয়ে আছে ২৬৯ রানে।
বাংলাদেশের দশাটা আরও করুন হতে পারতো। কিন্তু দিনের আলো কমে আসায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচে সফরকারীরা।
ব্যাট হাতে অপরাজিত ৩৮ রানের পর ৪ উইকেট; বাংলাদেশের লড়াই মাটি করে দিলেন হার্মার।
একের পর এক সঙ্গীকে হারালেও সফরকারীদের ভরসা হয়ে আছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট ফিফটির জন্য তার দরকার আর ৬ রান।
সাদমান (৯) বোল্ড হওয়ার পর শান্তকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন জয়। দুজনে ৫৫ রানের জুটিও গড়ে ফেলেন।
কিন্তু দলীয় ৮০ রানে বোল্ড হন সেট ব্যাটার শান্ত (৩৮)। স্কোরবোর্ডে আর কোনো রান যোগ না হতেই শূন্য হাতে বিদায় নেন মুমিনুল।
টাইগার অধিনায়কের ফেরার পর অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিমকেও (৭) বেশিক্ষণ টিকতে দেননি হার্মার । লেগ-স্টাম্পের বাইরে বল টোকা দিতে গিয়ে উইকেটরক্ষক কাইল ভেরেইনের গ্লাভসবন্দী হন তিনি।
তার আগেও হার্মারের বলে একইরকম ব্যাট চালিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেবার রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান মুশফিক।
চার উইকেট হারানোর পর নাইট-ওয়াচ ম্যান হিসেবে ব্যাটিংয়ে আসেন তাসকিন আহমেদ। ৬ বল খেলে কোনো রান না করলেও কাজটা ঠিকমতোই করেছেন এই পেসার। ওপেনার মাহমুদুল জয় ৪৪ রানে অপরাজিত আছেন।
প্রোটিয়ারা প্রথম ইনিংসে ২৬৯ রানে এগিয়ে আছে।
কিংসমিডে টস জিতে বোলিং নিয়েছিলেন মুমিনুল হক। কিন্তু সাইডস্ক্রিন সমস্যার কারণে প্রথম আধঘণ্টা খেলা না হওয়ায় টাইগারররা ঘরে তুলতে পারেনি সুবিধা।
আলো স্বল্পতার কারণে শেষ বেলার সুবিধাও হারায় সফরকারীরা। ওই সুবিধা কাজে লাগিয়ে প্রোটিয়ারা ৪ উইকেটে ২৩৩ রান তুলে শেষ করে প্রথম দিন।
তবে দ্বিতীয় দিন সকালেই ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।
পেসার খালেদ আহমেদ পরপর তুলে নেন কাইল ভেরাইনে (২৮) ও ওয়ান মুলদারকে (০)। প্রথম দিন ফিফটি করে অপরাজিত থাকা টেম্বা বাভুমা সাবলীলভাবে খেলে যাচ্ছিলেন। তাকে ৯৭ রানে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান মিরাজ। এরপরও কেশব মহারাজ (১৯), হারমার (৩৮*) এবং উইরিয়ামস ও অলিভিয়েরের (১২) ছোট ছোট সংগ্রহে ভালো রান পেয়ে যায় স্বাগতিকরা।
ব্যাট হাতে জবাব দিতে নেমেই বাংলাদেশ বুঝতে পারে একাদশে বাড়তি স্পিনার না রেখে ও টস জিতে বোলিং নিয়ে বড় ভুলটা করে ফেলেছে। নতুন বলে দুই প্রোটিয়া পেসার অলিভিয়ের ও উইলিয়ামস মাত্র ৯ ওভার বোলিং করেন।
এরপর দুই প্রান্ত দিয়ে টানা বোলিং করে গেছেন বাঁ-হাতি স্পিনার মহারাজ ও ডানহাতি হারমে। মহারাজ সুবিধা করতে না পারলেও হারমে তুলে নিয়েছেন টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে।
শুরুতে হারমারের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান বাঁ-হাতি ওপেনার সাদমান ইসলাম। তিনি ৯ রান করেন। এরপর নাজমুল শান্ত ও মাহমুদুল জয়ের জুটিতে দিন শেষ হবে বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু শান্তকে বোল্ড করে হারমে তাদের ৫৫ রানের জুটি ভাঙেন।
শান্ত ৮৭ বলে দুই চার ও দুই ছক্কায় ৩৮ রান করে ফিরে যান। হারমের পরের ওভারে শটে ক্যাচ দেন মুমিনুল হক (০)। ডানহাতি ওই স্পিনার তুলে নিয়েছেন মুশফিককেও (৭)।
বাংলাদেশ দলের হয়ে প্রথম ইনিংসে চার উইকেট নিয়েছেন পেসার খালেদ আহমেদ। তিন উইকেট দখল করেছেন মেহেদি মিরাজ। এছাড়া এবাদত হোসেন নিয়েছেন দুই উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস: ১২১ ওভারে ৩৬৭/১০ (এলগার ৬৭, এরউইয়া ৪১, পিটারসেন ১৯, রিকলটন ২১, তেম্বা ৯৩, কাইল ২৮, উইয়ান ০, কেশব ১৯, সিমন ৩৮, উইলিয়ামস ১২, অলিভার ১২; তাসকিন ২৩-৪-৬৯-০, ইবাদত ২৯-১০-৮৬-২, মিরাজ ৪০-৮-৯৪-৩ , খালেদ ২৫-৩-৯২-৪, মুমিনুল ৪-০-১৭-০)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৪৯ ওভারে ৯৮/৪ (সাদমান ৯, মাহমুদুল ৪৪*, নাজমুল ৩৮, মুমিনুল ০, মুশফিক ৭, তাসকিন ০*; হার্মার ২০-৭-৪২-৪, উইলিয়ামস ৫-০-১৫-০, অলিভার ৪-১-৯-০, কেশব ১৯-১০-২৪-০, এলগার ১-০-৮-০)।