প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ প্রকাশের সময় :১২ মার্চ, ২০২২ ১১:৩১ : অপরাহ্ণ
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে (সিন্দুক) চার মাস ছয় দিন পর মিলেছে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার ২৯৫ টাকা।
এছাড়াও পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও রৌপ্যলঙ্কারসহ অনেক বৈদেশিক মুদ্রা।
আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে চার মাস পর মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়। বাক্সগুলো থেকে টাকা বের করে প্রথমে বস্তায় ভরা হয়।
এবার ১৫ বস্তা টাকা হয়। এরপর শুরু হয় টাকা গণনার কাজ। টাকা গণনার কাজ শেষ হয় সন্ধ্যা ৭টায়।
প্রতি তিন মাস পর পর সিন্দুকগুলো খোলা হলেও করোনার কারণে এবার তা খোলা হয়েছে চার মাস ছয় দিনপর।
টাকা গণনায় অংশ নিয়েছেন রূপালী ব্যাংকের এজিএম ও অন্যান্য কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদ্রাসা, এতিমখানার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
এর আগের বার সিন্দুকগুলো খোলা হয় গত বছরের ৬ নভেম্বর। তখন রেকর্ড তিন কোটি সাত লাখ ১৭ হাজার ৫৮৫ টাকা এবং বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গিয়েছিল।
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান।
শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এই মসজিদটি গড়ে উঠেছে বহু বছর আগে।
মানুষের ধারণা, এই মসজিদে খাস নিয়তে দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এজন্য দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ এখানে এসে মানতের টাকা সোনা, রুপার গহনা দান করে থাকেন।
অন্য ধর্মের মানুষেরাও এখানে দান করেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। আর এই ধারাবাহিকতা চলছে আড়াই শ’ বছরেরও বেশি সময় ধরে।
মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীশ আলম বলেন, ১৯৯৭ সাল থেকে এই মসজিদটি ওয়াকফের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। তখন থেকে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মসজিদের সিন্দুক খুলে টাকা গণনা শুরু হয়।
তিনি জানান, এখানে একটি এতিমখানা রয়েছে। এতিমখানার খরচ এই টাকা থেকে চালানো হয়। এ ছাড়া মসজিদের বিভিন্ন উন্নয়নমূলককাজ এই অর্থে চলে। ক্যান্সার, কিডনি রোগে আক্রান্ত দরিদ্র ব্যক্তিদেরও এই তহবিল থেকে সাহায্য দেয়া হয়। মসজিদ ও ইসলামী কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দান বাক্সের টাকা ব্যাংক-হিসাবে জমা রাখা হয়। সেখান থেকে অনুদান ও সহায়তায় খরচ করা হয়।