নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৩১ অক্টোবর, ২০২১ ৫:১৮ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী এক ছাত্রলীগ নেতা। গতকাল শনিবার রাতে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী ১৬ ছাত্রলীগ কর্মীকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করা হয়। ইতোমধ্যে এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত দুই ছাত্রলীগ কর্মী হলেন-রক্তিম দে (২১) ও এনামুল হোসেন সীমান্ত (২১)। তারা এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
নওফেলের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা তৌফিকুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
গতকাল ক্যাম্পাসে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পাঁচলাইশ থানার ওসি তদন্ত হাবীবুর রহমান রাজনীতি সংবাদকে বলেন, চমেকে গতকাল সংঘর্ষের ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। বাকি আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তার করতে আমরা চেষ্টা করছি।
এদিকে মামলা দায়ের হওয়ার পর সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির গ্রুপের ছাত্রলীগের কর্মীরা গা ঢাকা দিয়েছেন। মামলার আসামি নাছির গ্রুপের নেতা-কর্মীদের পুলিশ হন্য হয়ে খুঁজছে।
এতোদিন ধরে চমেকে নাছির গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মীদের একচ্ছত্র আধিপত্য থাকলেও এখন তারা নওফেল অনুসারীদের আতঙ্কে ক্যাম্পাস ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছেন।
চমেক ক্যাম্পাস গতকাল থেকে নওফেল অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণে। কর্তৃপক্ষ অনর্দিষ্টকালের জন্য কলেজ ও হোস্টেল বন্ধ ঘোষণা করলেও ক্যাম্পাসে নওফেল অনুসারীদের তৎপরতা রয়েছে। তারা ক্যাম্পাসে মহড়া দিচ্ছেন।
আজ রোববার দুপুরে চমেকে শোডাউন করেছে নওফেলের অনুসারী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। চমেকের প্রধান ফটকে নওফেলের অনুসারী শতাধিক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী মানববন্ধন করেছেন। এতে সংহতি প্রকাশ করেছেন নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর।
মানববন্ধনে ছাত্রলীগের নেতারা প্রতিপক্ষকে প্রতিহত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
মন্ত্রী নওফেলের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা কে এম তানভীর রাজনীতি সংবাদকে বলেন, আমাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আমরা এ মানববন্ধন পালন করেছি। এর মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে আমরা ক্যাম্পাসে আমাদের অস্তিত্বের জানান দিয়েছি। আমাদের হুংকারে প্রতিপক্ষ গর্তে ঢুকে গেছে। ক্যাম্পাসে কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে আমরা তাদের প্রতিহত করবো।
এ বিষয়ে জানতে চমেক ছাত্রলীগ একাংশের কমিটির সভাপতি হাবীবুর রহমানের মোবাইলে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে গতকাল প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত নওফেলের অনুসারী ছাত্রলীগ কর্মী মাহাদি জে আকিবের মাথায় অস্ত্রোপচার শেষে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে আকিবের মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। এতে তার মাথার হাড় ভেঙে গেছে। মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।
গতকাল শনিবার সকাল ৯টার দিকে চমেক ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের তিনজন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: চমেকে ছাত্রলীগের নাছির-নওফেল গ্রুপের পাল্টাপাল্টি হামলা-সংঘর্ষ, আহত ৩