করনোভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশে চলছে সরকার ঘোষিত ‘কঠোর লকডাউন’। আজ শুক্রবার (৭ জুলাই) সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় এমনিতেই বাহিরে মানুষের আনাগোনা কম। এর উপর বাধ সেধেছে রিমঝিম বৃষ্টি। লকডাউনের পাশাপাশি সাপ্তাহিক ছুটির দিনে থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে রাজধানীর রাস্তাঘাট প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে। গতকালের চেয়ে ঢাকার রাস্তাঘাট আজ বেশি ফাঁকা।
লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় দেখা গেছে, বৃষ্টিতে ছাতা মাথায় লকডাউন কার্যকরে দায়িত্ব পালন করছেন সেনাবাহিনী, পুলিশ-র্যাব, বিজিবি ও ম্যাজিস্ট্রেট। অপ্রয়োজনে মানুষকে ঘোরাফেরা করতে দেখলে বাইরে বের হওয়ার কারণ জানতে চাইছেন। দেওয়া হচ্ছে মামলা, করা হচ্ছে জরিমানা। এ ছাড়া ট্রাফিক পুলিশ অযাচিত ঘোরাফেরা মনে করলে গাড়িরও মামলা দিচ্ছে।
গতকাল লকডাউনের প্রথম দিনে যারা বিনা কারণে ঘরের বাহিরে বের হয়েছেন, তাদের অনেককেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হতে হয়েছে কিংবা জরিমানা গুনতে হয়েছে। এর প্রভাব দেখা গেছে আজ।
রিকশা এবং প্রাইভেট গাড়ি তেমন একটা দেখা যায়নি। অল্প কিছু রিকশা, মাইক্রোবাস, ট্রাক, কার্ভাড ভ্যান ও পিকআপ চলাচল করছে। রাজধানীর, গুলশান, বনানী, বারিধারা ও মহাখালী এলাকার সড়কগুলোতে একেবারেই সুনসান নিরবতা বিরাজ করছে। মাঝে মাঝে দু একটি রিকশা ও প্রাইভেটকার এদিক-সেদিক থেকে এলেও তাদেরকে পুলিশের চেকপোষ্টে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হচ্ছে।
মহাখালী এলাকায় রিকশাচালক হাসমত আলী বলেন, আজ রাস্তাঘাটে মানুষ নাই। গতকালের চেয়েও আজ রাস্তায় মানুষ অনেক কম। সকাল থেকে বৃষ্টিতে ভিজছি কিন্তু তেমন ভাড়া পাইনি।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকার চিত্র সামান্য ভিন্ন ছিলো। এখানে ট্রাক, মিনি ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে সবজি নিয়ে ভারতে আসা যাওয়া করতে দেখা গেছে। নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সবজি বিক্রেতারা কেনাবেচা ও করেছেন। তবে সবকিছুই অন্যান্য দিনের চেয়ে হাকডাক অনেক কম রয়েছে।
মূল রাস্তায় সড়ক ও মানুষের সংখ্যা কম থাকলেও অলিগলিতে মানুষের চলাচল বেশি। রাজধানীর কলাবাগান, কাঁঠালবাগান, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, ফার্মগেট এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে। অলিগলিতে চায়ের দোকান, মুদির দোকান ও সেলুন খোলা রাখা হয়েছে, যা খুলতে নিষেধ করা হয়েছে সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপনে। আর এসব তদারকির অভাব দেখা গেছে রাজধানীজুড়ে।
কঠোর লকডাউনের প্রথম দিন রাজধানীতে যৌক্তিক কারণ ছাড়া রাস্তায় বের হওয়ায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৫৫০ জন। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করেছেন ২১২ জনকে। ৩৩৮ জনকে আটকের পর মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। যা আগামী ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে। এই সময়ে মানুষের সার্বিক কার্যাবলী ও চলাচলে ২১টি শর্ত দিয়ে বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার।