টানা সপ্তম বারের মতো একাকী ঈদ উদযাপন করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হওয়ার পর কারাগার, হাসপাতাল আর ভাড়াবাড়ি ফিরোজায় টানা ছয়টি ঈদ কেটেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার। তার এবারের ঈদও কাটছে হাসপাতালেই। এর আগে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুটি ঈদ কারাগারে কাটিয়েছেন বিএনপি প্রধান।
দলের নেতাকর্মী তো বটেই, সাধারণ মানুষের কাছেও খালেদা জিয়ার দেখা পাওয়া ছিল অনেকটাই অসাধ্য। তবে, ৩৬৫ দিনের মধ্যে দুইটি দিন ছিল সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। নিরাপত্তা আর আড়ম্বরের বেড়াজাল ছেড়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
২০১৮ এবং ২০১৯-এই দুই বছরে চারটি ঈদ খালেদা জিয়া কাটিয়েছেন পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগার ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যালের প্রিজন সেলে। ঈদের দিনে তার সান্নিধ্য পেয়েছেন শুধু স্বজনরা।
পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দণ্ড স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে ২০২০ সালের ২৫শে মার্চ সাময়িক মুক্তি পান খালেদা জিয়া। গেল বছরের দু’টি ঈদ ভাড়া বাড়ি ফিরোজাতে কাটালেও নেতাকর্মীরা দেখা পাননি দলীয় প্রধানের।
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে গত ২৭ এপ্রিল পরীক্ষার জন্য রাজধানীর বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ৩ মে তিনি শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিয়ে যাওয়া হয়। এখনো তিনি সিসিইউতেই আছেন। গত ৮ মে তিনি করোনামুক্ত হন।
এর আগে, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসা করাতে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে গত ৫ মে রাতে সরকারের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়। খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই লিখিত আবেদন জমা দেন। গত ৯ মে সেই আবেদন নাকচ করে দেয় সরকার।
দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে করোনামুক্ত হওয়ার পর ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন খালেদা জিয়া। তবে, বাসায় নেয়ার মতো অবস্থা না হওয়ায় এবারের ঈদুল ফিতরও তাকে পার করতে হচ্ছে হাসপাতালে শুয়ে।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। দেশজুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে ছয় মাসের জন্য মুক্তি পেয়েছিলেন খালেদা জিয়া। এরপর প্রথমে সেপ্টেম্বরে ও পরে চলতি বছরের মার্চে আবারো ছয় মাসের জন্য তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।