রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৯ মার্চ, ২০২১ ১২:৪৫ : অপরাহ্ণ
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুসহ চার নেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আবেদন করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পচাত্তরের ১৫ আগস্ট স্মরণ করিয়ে দিয়ে বক্তব্য দেওয়ার ঘটনায় এ মামলা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৯ মার্চ) রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক মোসাব্বিরুল ইসলাম জেলা মুখ্য মেট্রোপলিটন আদালতে এ মামলার আবেদন করেন। আবেদনের বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি আদালত।
রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিনু ছাড়াও যাদের নামে মামলার আবেদন করা হয়েছে, তারা হচ্ছেন-বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিলন।
আবেদনে মুসাব্বিরুল ইসলাম উল্লেখ করেন, গত ২রা মার্চ রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ হয়। এতে আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি ঘৃণা বিদ্বেষ সৃষ্টি ও প্রধানমন্ত্রীকে হুমকিসহ নির্বাচিত সরকার উৎখাতের জন্য রাষ্ট্র বিরোধী বক্তব্য দেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ১২৩(ক)/১২৪(ক)/৩৪ ধারা মোতাবেক মামলা দায়ের করা হবে। এজন্য ফৌজদারী কার্যবিধির ১৯৬(ক) ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে অনুমতির আবেদন করা হয়েছে।
মামলার বাদী মুসাব্বিরুল ইসলাম জানান, আসামিরা প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তারা বারবার পঁচাত্তর সালে বঙ্গবন্ধুকে স্ব-পরিবারে হত্যার কথা স্মরণ করিয়ে হুমকি দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি দিয়েছে। সরকার উৎখাতের হুমকি দিয়েছে। যা রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধের সামিল। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করতে সরকারের অনুমতি প্রয়োজন হয়। এজন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে সরকারের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। অনুমতি পেলেই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হবে।
সমাবেশে দেওয়া বক্তৃতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেও মামলা থেকে রেহাই পেলেন না মিনু।
রোববার গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে রাজশাহীর সাবেক এ মেয়র দুঃখ প্রকাশ করেন।
এর আগে মিনুকে ক্ষমা চাইতে নগর আওয়ামী লীগের বেঁধে দেওয়া ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষ হয় শনিবার সন্ধ্যায়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তিনি ক্ষমা না চাইলেও পর দিন তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে মিনু উল্লেখ করেন—‘আমার বক্তব্যের জন্য যারা ব্যথিত হয়েছেন, মর্মাহত হয়েছেন, আমি তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
মিনু আরও বলেন, আমি এই মহানগরীতে জন্মগ্রহণ করে দীর্ঘদিন রাজশাহীবাসীকে নিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করে আসছি। স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ সব আন্দোলনে পাশে পেয়েছি। সুতরাং কোনো ব্যক্তি বিশেষ বা গোষ্ঠী বিশেষকে উদ্দেশ্য করে আক্রোশমূলক বক্তব্য দেওয়া আমার স্বভাববহির্ভূত। তাই সবাইকে আমার বক্তব্যে ষড়যন্ত্র না খোঁজার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
গত মঙ্গলবার বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে মিজানুর রহমান মিনু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আজ রাত, কাল আর সকাল নাও হতে পারে। পচাত্তর মনে নাই?’ এর প্রতিবাদ জানায় রাজশাহী আওয়ামী লীগ। পর দিন এক বিক্ষোভ-সমাবেশ থেকে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন মিনুকে বক্তব্য প্রত্যাহারে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন।
লিটন ঘোষণা দেন, এই সময়ের মধ্যে মিনু ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।