একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি আজ। এই দিনটিকে শাসক দল আওয়ামী লীগ পালন করছে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস হিসেবে৷ আর বিএনপি পালন করছে গণতন্ত্র হত্যার কালো দিন৷
২০১৮ সালের এদিন দেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশভাবে জয় পায় এবং টানা তৃতীয়বারের মতো পাঁচ বছরের জন্য সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পায়।
করোনার কারণে বড় গণজমায়েত না করলেও রাজধানীসহ সারা দেশের জেলা-উপজেলা এমনকি ওয়ার্ড ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত দলীয় কার্যালয়সহ পাড়া-মহল্লায় অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে রাজপথ দখলে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে ক্ষমতাসীনদের। এছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবে আলোচনা সভা, আনন্দ র্যালি ও মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো।
একাদশ সংসদ নির্বাচন বাতিল ও পুনর্নির্বাচনের দাবিতে দিনটিতে ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ-সমাবেশের কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি।
আ’লীগের ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ কর্মসূচি : দিনটি উপলক্ষে আজ বেলা ১১টায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আলোচনা সভার আয়োজন করছে। দলটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
বেলা ৩টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী। এছাড়া কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
দিনটিতে জাতীয় পতাকা হাতে বিজয় শোভাযাত্রা করবে কৃষক লীগ। শোভাযাত্রা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে হাইকোর্ট ও জাতীয় প্রেস ক্লাব ঘুরে পল্টন হয়ে আবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হবে। এছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে থেকে আনন্দ র্যালি করবে ছাত্রলীগ। আওয়ামী যুবলীগের সব জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভা, ওয়ার্ড, ইউনিয়নে আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ হবে।
এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, মৎস্যজীবী লীগসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য সহযোগী এবং সমমনা সংগঠনগুলো আজ নানা কর্মসূচি পালন করবে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে দিবসটি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ঘোষিত কর্মসূচি স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে যথাযথভাবে পালনের জন্য সব জেলা, মহানগর, উপজেলা ও থানা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিএনপির ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ কর্মসূচি : বিক্ষোভ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজকের দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করবে বিএনপি। এ লক্ষ্যে আজ একাদশ সংসদ নির্বাচন বাতিল ও পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি পালন করবে দলটি। কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দুপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে সমাবেশ হবে। এছাড়া দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে কর্মসূচি পালিত হবে।
ঢাকার কর্মসূচিকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। বিক্ষোভ সমাবেশকে সফল করতে ঢাকা মহানগর বিএনপিসহ প্রত্যেক অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে সমাবেশকে ঘিরে যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়, কেউ যাতে সরকারের ফাঁদে পা না দেন সে বিষয়ে কঠোর বার্তা রয়েছে হাইকমান্ডের।
দিবসটি সামনে রেখে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি প্রহসনের কলঙ্কিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আগের রাতে ভোট ডাকাতির এ নির্বাচনকে বাংলাদেশের মানুষ ক্ষোভ ও ঘৃণার সঙ্গে স্মরণ করে।
নির্বাচন কমিশন ও রাষ্ট্রযন্ত্রের যোগসাজশে জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে আওয়ামী লীগ। আমরা এ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছি। নতুন নির্বাচনের দাবি করছি। এ দিবসে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করব।
এদিকে বিএনপির মতো করে সরকারবিরোধী অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও দিবসটিকে ভোট ডাকাতির দিবস হিসেবে পালন করবে। এজন্য এসব দলের উদ্যোগে আলোচনা ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হবে।