মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদের লেখা ‘রাষ্ট্র বিপ্লব সামরিক বাহিনীর সদস্যবৃন্দ এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ বইটি নিষিদ্ধ ও বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বইটিতে সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানকে ‘দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন এক সময়ের বিএনপি নেতা অলি আহমদ।
আজ মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানিতে এ আদেশ দেন।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ উদ্দিন আহমেদ আসিফ রিট আবেদনটি দায়ের করেন ।
গত ১৭ আগস্ট বিদেশে থাকা সাংবাদিক কনক সরওয়ার তার ইউটিউব চ্যানেলে কর্নেল অলি আহমেদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। সেই সাক্ষাতকারে অলি আহমদ বলেছেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট।
অলি আহমদের বক্তব্যে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনে গত ৭ সেপ্টেম্বর তাকে উকিল নোটিস দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইমতিয়াজ উদ্দিন আহমেদ আসিফ। সেখানে অলি আহমদকে সাক্ষাতকারের ওই বক্তব্য প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হয়েছিল। ২০ সেপ্টেম্বর সেই নোটিসের জবাব দেন অলি।
রিট আবেদনকারী আইনজীবী আসিফ জানান, অলি আহমদ নোটিসের জবাব দিলেও তার বক্তব্যে অনড় থাকেন। অথচ সংবিধানে বঙ্গবন্ধুকে প্রথম রাষ্ট্রপতি বলা হয়েছে এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপ-রাষ্ট্রপতি। এরপর তার জবাব যুক্ত করে গত ২২ নভেম্বর রিট আবেদনটি করি।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
অলির অন্য যেসব বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে, সেগুলোও নিষিদ্ধ এবং বাজেয়াপ্ত করতে বলেছেন আদালত। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বারাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও তথ্য মন্ত্রণালয়কে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে ১৯৭৮ সালে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের গড়ে তোলা বিএনপিতে যোগ দেন অলি আহমদ। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য অলি দুই দফায় খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।
২০০৬ সালে তিনি বিএনপি ছেড়ে এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সাথে মিলে এলডিপি গঠন করেন।