রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪ | ২১ আশ্বিন, ১৪৩১ | ২ রবিউস সানি, ১৪৪৬

মূলপাতা নির্বাচন

একক প্রার্থী চূড়ান্ত হচ্ছে আজ

২৫ পৌরসভায় আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ১০৫


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৮ নভেম্বর, ২০২০ ১১:০৪ : পূর্বাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগে মনোনয়ন প্রত্যাশীর জট লেগেছে । ২৫টি পৌরসভায় গড়ে চারজনের বেশি মনোনয়ন প্রত্যাশী। আওয়ামী লীগের ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে তিন দিনে ২৫টি পৌরসভার বিপরীতে ১০৫টি দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে ।

একক প্রার্থী চূড়ান্ত করতে আজ (২৮ নভেম্বর) শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান রাজনীতি সংবাদকে জানান, ২৫টি পৌরসভার বিপরীতে মোট ১০৫টি দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে।

গত মঙ্গলবার থেকে দলীয় সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছে ফরম বিক্রি শুরু করে আওয়ামী লীগ। প্রথম দিনে কোনো ফরম বিক্রি না হলেও পরের তিন দিনে ১০৫ জন দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। অর্থাৎ প্রতিটি পৌরসভার বিপরীতে গড়ে চারজনের অধিক নেতা দলীয় ফরম কিনেছেন।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলেছেন, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রার্থী বাছাই করা হবে। এলাকায় যাদের পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি, জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে তাদের প্রাধান্য দেয়া হবে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ রাজনীতি সংবাদকে বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে যেসব নেতাদের ক্লিন ইমেজ ও এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য একটা বার্তা যাচ্ছে। দলের নিয়ম যারা মানবেন না তারা কেউই পার পাবেন না। প্রত্যেককে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের মধ্যে পড়তে হবে, এ মেসেজটা আমরা দিয়ে যাচ্ছি, জেলা পর্যায়েও পরিবর্তন আনা হয়েছে একই কারণে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত রেজুলেশনে প্রস্তাবিত প্রার্থীর বাইরে অন্য কারও কাছে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেনি আওয়ামী লীগ। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি পৌরসভায় তিনজন বা তার অধিক মনোনয়নপ্রত্যাশীর নামের তালিকা তৃণমূল থেকে রেজুলেশন আকারে পাঠানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। নির্দেশনা মেনে কেন্দ্রে পাঠানো প্রায় প্রতিটি পৌরসভার তালিকায় চার বা তার অধিক প্রার্থীর নাম ছিল। সেই তালিকা দেখেই ফরম বিক্রি করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন ৯ জন। তারা হলেন- বর্তমান মেয়র ও সীতাকুণ্ড পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদিউল আলম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গোলাম রব্বানী, পৌর কাউন্সিলর মাইমুন উদ্দিন মামুন, পৌর কাউন্সিলর সফিউল আলম চৌধুরী মুরাদ, আওয়ামী লীগ নেতা মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার আলী শামীম, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান এবং মোহাম্মদীয়া গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।

পাবনার চাটমোহর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন সাতজন। তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সাখো, গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মির্জা রেজাউল করিম দুলাল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য হেলাল উদ্দিন, প্যালেন মেয়র নাজিম উদ্দিন মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব এলাহী বিষু, অ্যাডভোকেট ইতি হোসেন স্বপ্না এবং অ্যাডভোকেট সাইদুল ইসলাম। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মেনে সাতজনের নামই রেজুলেশনের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে এবং তারা সবাই দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। তাদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকার ঘোষণাও দিয়েছেন কেউ কেউ। আবার কেউ ড্যামি প্রার্থী হিসেবেও মাঠে রয়েছেন।

একই অবস্থা সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরেও। সেখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী আটজন। তাদের মধ্যে রয়েছেন- বর্তমান মেয়র হালিমুল হক নিরু, যুবলীগ নেতা রাজিব শেখ, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুর রহিম, আওয়ামী লীগ নেতা তরুলদি, আবদুল সালাম ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ আবদুল ওয়াহেদ কাজল। তারা সবাই নির্বাচনী মাঠে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে বরগুনার বেতাগী পৌরসভায় তৃণমূল থেকে তিনজনের নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান মেয়র এবিএম গোলাম কবির, জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নাহিদ মাহমুদ হোসেন লিটু, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাদিসুর রহমান পান্না। তারা তিনজনই দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।

আবার কোনো কোনো পৌরসভায় তৃণমূল থেকে পাঠানো রেজুলেশনে একক প্রার্থীর নামও দেয়া হয়েছে। যেমন- নেত্রকোনোর মদন পৌরসভায় একক প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র আবদুল হান্নান তালুকদারের নাম পাঠানো হয়েছে।

প্রথম ধাপে দেশের ২৫টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন ফরম দাখিলের শেষ তারিখ ১ ডিসেম্বর, মনোনয়ন বাছাই ৩ ডিসেম্বর ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেখ দিন ১০ ডিসেম্বর। প্রথম ধাপের সবকটি পৌরসভায় ইভিএমে ভোট হবে।

যে ২৫টি পৌরসভায় ভোট হবে সেগুলো হলো- পঞ্চগড় জেলার পঞ্চগড় পৌরসভা, পাবনার চাটমোহর, ময়মনসিংহের গফরগাঁও, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ, কুষ্টিয়ার খোকসা, নেত্রকোনার মদন, দিনাজপুরের ফুলবাড়ী, চুয়াডাঙ্গা, মানিকগঞ্জ, রংপুরের বদরগঞ্জ, খুলনার চালনা, ঢাকার ধামরাই, কুড়িগ্রাম, বরগুনার বেতাগী, গাজীপুরের শ্রীপুর, রাজশাহীর পুঠিয়া, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা, সুনামগঞ্জের দিরাই, রাজশাহীর কাটাখালী, বরিশালের উজিরপুর, মৌলভীবাজারের বড়লেখা, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, বরিশালের বাকেরগঞ্জ, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ ও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর